বেসরকারি খাতের এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ চারজন ঋণখেলাপি পরিচালক তাদের পদে বহাল রয়েছেন। ব্যাংকটির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ঋণখেলাপি থাকা সত্ত্বেও দায়িত্বে বহাল থাকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ব্যাংকিং আইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ঋণখেলাপি ব্যক্তি কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারেন না। তবুও এনসিসি ব্যাংকের এই ঋণখেলাপি পরিচালকরা তাদের পদে বহাল রয়েছেন।
খাতটির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋণখেলাপি থাকা সত্ত্বেও এসব ব্যক্তিদের পদ থেকে সরানো হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, যা দেশের আর্থিক খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার ঘাটতিকে স্পষ্ট করে তুলেছে। ঋণখেলাপিদের এভাবে পদে বহাল রাখা হলে তা ভবিষ্যতে দেশের আর্থিক নীতির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমিয়ে দিতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার আট ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করছেন না। খেলাপি হয়ে পড়ায় বেশ কয়েকটি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছে। একই অবস্থা তাঁর বাবা ও এনসিসি ব্যাংকের পরিচালক আবদুল আউয়ালেরও। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁদের প্রাইম গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা।
এর বাইরে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলা হোসাইন ও পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেমও ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছেন। ৪ পরিচালকের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ায় এনসিসি ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের ভিত্তিতে বিএসইসি এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
ঋণখেলাপি হলেও এনসিসি ব্যাংকের পরিচালক পদে বহাল রয়েছেন তাঁরা। আবার পুনর্নিয়োগ পাওয়ারও চেষ্টা করছেন নানাভাবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, ঋণখেলাপি কেউ ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন না। আবার পরিচালক পদে থাকা কেউ ঋণখেলাপি হলে তাঁকে অপসারণ করতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর এনসিসি ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার জন্য অনুমতি চেয়ে বিএসইসির কাছে আবেদন করে। ৯ অক্টোবর বিএসইসি এক চিঠিতে এনসিসি ব্যাংকের এমডিকে জানায়, ব্যাংকটির চার পরিচালকের ঋণ (আবুল বাশার, আবদুল আউয়াল, এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম ও সোহেলা হোসাইন) খেলাপি থাকায় এই বন্ড অনুমোদন দেওয়া গেল না।
অর্থসূচক/এমএইচ



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.