বিগত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা না চেয়ে আওয়ামী লীগ নানারূপে ফিরে আসার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, বৈষম্যহীন দেশ গড়তে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিপ্লবের পর জামায়াত কর্মীরা চাঁদাবাজি কিংবা দখল করেনি, বরং মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিগত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা না চেয়ে নানারূপে ফিরে আসার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।
রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের রুকন সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর অহংকার ও দাম্ভিকতার মাধ্যমে দেশ চালিয়েছে। আল্লাহ অহংকারের পতন ঘটিয়েছেন। যখনই আমরা কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে যেতাম, বলা হতো ২০১৩ সালে হেফাজতের যে পরিণতি হয়েছে আপনাদেরও তাই হবে। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ভাইয়েরা সবচেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্ট সারা দেশে পট পরিবির্তনের পর দেশের কোনো জায়াগায় জামায়াত-শিবিরের ভাইয়েরা কারও কোনো ক্ষতি করেনি। কারও কাছে চাঁদা দাবি করেনি।
জামায়াত আমির বলেন, বিগত ১৭ বছরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। যাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ মানুষ। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব হত্যাকারীদের বিচার করতে হবে। সেদিন লোগি বৈঠা দিয়ে গণতন্ত্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে জবাই করা হয়েছিল। সেদিনই এদেশ পথ হারিয়ে ছিল। সেদিন তারা লাশের উপর উঠে নেচেছিল। লাশ চুরি করতে চেয়েছিল। ২৮ আগস্ট যাদের খুন করা হয়েছে তারা কারও উপর ঢিল ছুড়েনি। তাদের অপরাধ ছিল তারা জামায়াত ইসলামীর সভায় যোগ দিয়েছিল। ২৮ তারিখের পর এক সাজানো নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে একটি দল। এখন দলের মানুষও তাদের নাম নিতে চায় না। সাড়ে ১৫ বছর দাপটের সঙ্গে ক্ষমতায় ছিল। ক্ষমতায় আসার দুই মাস পরেই ৫৭ জন চৌকস সেনাকর্মকর্তাকে তারা হত্যা করেছিল। সেদিন তাদের পরিবারকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। লাশ ড্রেনে ভাসিয়ে দিয়েছিল। এটা নিয়ে করা সেনাবাহিনীর তদন্তের রিপোর্ট সেনাবাহিনী ও জানলো না, সারা বিশ্বের কেউ জানলো না। দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছর পর আবার ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এদেশ পথ ফিরে পেয়েছে। জামায়াতে ইসলামী কোনো প্রতিশোধ নেবে না, তবে জুলুমের শিকার প্রতিটি মানুষকে ন্যায়বিচার দেবে বলেও জানান তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগ নামে হাতুড়ি-হেলমেট বাহিনী তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ। ওবায়দুল কাদেররা অহংকার ও অন্যায় নিয়ে গর্ব করতেন। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। মানুষকে মানুষ মনে করতেন না। আজ তারা কোথায় গেলেন। প্রতিটি অপকর্মের ফল তাদের পেতে হবে।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.