চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডেঙ্গু সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় নগরীর ছয়টি এলাকা ‘রেড জোন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়ায় গত ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় কোতোয়ালি, বাকলিয়া, বায়েজিদ বোস্তামী, বন্দর, পাহাড়তলী ও খুলশীকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
গত ১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নগরীর ২৩টি এলাকায় মোট ৫১৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
রেড জোন হিসেবে তালিকাভুক্ত এলাকাগুলোর মধ্যে কোতোয়ালিতে সর্বোচ্চ ১০৬ জন, বাকলিয়ায় ১০৩ জন, বায়েজিদ বোস্তামীতে ৭৬ জন, বন্দরে ৩৩ জন, পাহাড়তলীতে ৩২ জন এবং খুলশীতে ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
রোগের দ্রুত বিস্তারের কারণে এই এলাকাগুলো সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া আরও পাঁচটি এলাকাকে ‘ইয়েলো জোন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যা সংক্রমণের মাঝারি উচ্চ ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়। এসব এলাকার মধ্যে পাঁচলাইশে ১৯ জন, হালিশহরে ১৮ জন, পতেঙ্গায় ১৫ জন, চান্দগাঁওয়ে ১১ জন ও ডবলমুরিংয়ে ১০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সাতটি এলাকাকে ‘ব্লু জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা মৃদু ঝুঁকির সংকেত দেয়। এর মধ্যে লালখান বাজারে ৯ জন, আগ্রাবাদে ৭ জন, মুরাদপুরে ৬ জন, আকবর শাহ ও কাট্টলীতে ৫ জন করে এবং নাসিরাবাদ ও দামপাড়ায় ৪ জন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া, চারটি এলাকাকে ‘গ্রিন জোনে’ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যা শহরের সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বলে বিবেচিত। এর মধ্যে অক্সিজেন এলাকায় তিনজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এবং সিটি গেট, চৌমোহনী ও সদরঘাটে দুজন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।
চলতি বছরের ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবে চট্টগ্রামে এরই মধ্যে ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। জানুয়ারিতে দুজন, মার্চ, জুলাই ও আগস্টে একজন করে এবং শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমান সংক্রমণ বৃদ্ধি ২০২৩ সালে মারাত্মক ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। ওই বছর চট্টগ্রামে ১৪ হাজার ৮২ জন আক্রান্ত হয়েছিল এবং ১০৭ জন মারা গিয়েছিল।
তবে এবারের পরিস্থিতি বিগত বছরগুলোর তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০২২ সালে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ৫ হাজার ৪৪৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৪১ জনের, যেখানে ২০২১ সালে মাত্র ২৭১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি এই অঞ্চলে ডেঙ্গুর ক্রমবর্ধমান হুমকির পাশাপাশি, ব্যাপক মশা নিয়ন্ত্রণ কৌশলের জরুরি প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.