বাংলাদেশ সরকার চাইলে দেশের পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধারে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে বলে জানিয়েছেন প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল এসোসিয়েশন (পাটা) চেয়ারম্যান পীটার এ. সীমন।
রবিবার (০৬ অক্টোবর) রাজধানীর শেরাটন হোটেলে আয়োজিত ‘রোডম্যাপ ফর ট্যুরিজম রিকভারিঃ প্রেজেন্ট বাংলাদেশ কনটেক্সট’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ পর্যটনের সোর্স মার্কেট হিসেবে পরিচিত দেশগুলোর জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশ সুবিধা প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন পাটা চেয়ারম্যান।
সেমিনারটির আয়জন করে দেশের শীর্ষস্থানীয় ভ্রমণ ও পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা দা বাংলাদেশ মনিটর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের জেনারেল সেক্রেটারি সৈয়দ গোলাম কাদির; সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মনিটর সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম।
মূল প্রবন্ধে গোলাম কাদির জানান, বর্তমানে দেশের হোটেলগুলোর অকুপেন্সী ৩০-৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অনেক বুকিং ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দেশের পর্যটন খাত মূলত অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল। সরকারি পরিসংখ্যান মতে ২০২৩ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৫ লাখ ৫৫ হাজার বিদেশী এসেছেন। তবে এদের মধ্যে কতজন শুধুমাত্র পর্যটনের জন্য এসেছেন, তার কোনও সঠিক তথ্য নেই। দেশের জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান ছিল ৩.২ শতাংশ।
গোলাম কাদির তার বক্তব্যে দেশের পর্যটনের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ প্রস্তাব করেন। এর মধ্যে রয়েছে ই-ভিসা চালু, ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ, জনসংযোগ কর্মকান্ড পরিচালনা, আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীগুলোতে অংশগ্রহণ, বিদেশে বাংলাদেশী মিশনগুলোতে পর্যটন কর্মকর্তা নিয়োগ, বাংলাদেশ পর্যটন প্রচারে বিমানের ভূমিকা বৃদ্ধি।
সাম্প্রতিক কালে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের ফলে বিপর্যস্থ পর্যটন খাতের পুনরুজ্জীবনে একটি সার্বিক সংকট ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান দেশের পর্যটন অংশীজনরা।
পাটা বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট শাহিদ হামিদ তার বক্তব্যে একটি আদর্শ পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের ইমেজ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি মনে করেন এর ফলে দেশে বিদেশী পর্যটকদের প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে।
টোয়াবের প্রেসিডেন্ট রাফিউজ্জামান সরাকারের প্রতি ট্যুর অপারেটর সেবার ওপর আরোপিত শুল্ক হ্রাসের আহবান জানান, যাতে তারা বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণীয় প্যাকেজ অফার করতে পারেন।
বেঙ্গল ট্যুরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ হোসেন ট্যুর অপারেটরদের যথাযথ স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি পুনরায় উল্লেখ করে বলেন, তারা দেশের জন্য মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেন। যথাযথ স্বীকৃতি পেলে ট্যুর অপারেটররা বাংলাদেশের পর্যটনের প্রচারে সারা বিশ্বে আরও ব্যাপক ভাবে ক্যাম্পেইন পরিচালনায় আগ্রহী হবেন।
জার্নিপ্লাসের প্রধান নির্বাহী তৌফিকুর রহমান মনে করেন, দেশের পর্যটনের প্রচার ও প্রসারে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্পৃক্ততা একটি গেইম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করতে পারে। তিনি বাংলাদেশের পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধারে পাটা’র সহযোগিতা কামনা করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি শ্রীলংকার পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধারে পাটা’র ভূমিকার কথা স্মরন করেন।
ইউনিক হোটেল এন্ড রিসোর্টস এর প্রধান নির্বাহী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মনে করেন, হোটেলগুলোতে পর্যটকদের যেসকল পন্য পরিবেশন করা হয়, সেগুলোর ওপর আগাম শুল্ক প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। এর ফলে হোটেলগুলো আকর্ষণীয় রেটে তাদের পন্য ও সেবা অফার করতে সক্ষম হবে।
সেমিনারে দেশের পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান ও গনমাধ্যম প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
অর্থসূচক/ এইচএআই



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.