সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন ও শহীদুল হক গ্রেপ্তার
পুলিশের সাবেক আইজি একেএম শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদেরকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাদের দুজনকে ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাতে ঢাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
সাবেক এ দুই আইজিপির বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। তবে কোন মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
একেএম শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ছিলেন পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে প্রতাপশালী আইজিপিদের অন্যতম। দু’জনই নিজেদেরকে আওয়ামী পরিবারের বলে দাবি করতেন। একেএম শহীদুল হক দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে শরীয়তপুর–১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। তবে মনোনয়ন পাননি। অন্যদিকে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের ছোট ভাই চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সুনামগঞ্জ–১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।
একেএম শহীদুল হক ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৮৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। শহীদুল হক পুলিশ সুপার হিসেবে চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জ জেলার দায়িত্ব পালন করেছেন। ডিআইজি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, রাজশাহী রেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জের কার্যভার পালন করেছেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও পুলিশের ভিন্ন ভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ২০১৪ সালের শেষদিন আইজিপির দায়িত্ব পান এবং ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারিতে অবসরে যান।
তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নরবালাখানা গ্রামে। তার ছোট ভাই ইসমাইল হক জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। আরেক ভাই নুরুল হক ব্যাপারী নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলাদেশ পুলিশের ৩১তম মহাপরিদর্শক ছিলেন। তিনি ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকের দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ছিলেন।
গত জুলাই মাসে ও আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের অতিমাত্রায় বল প্রয়োগে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন নেপথ্য নায়ক। তার নির্দেশে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে নতুন সরকার ৭ আগস্ট তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.