মালদ্বীপে অভ্যুত্থানের চেষ্টা

মালদ্বীপে মুইজ্জু সরকারকে ফেলে দিতে ‘আর্থিক অভ্যুত্থানের’ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মলদ্বীপের বিরোধী দলগুলি। বিদেশী অপশক্তির সাথে যোগসাজশে সরকার পতন চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন দ্বীপরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট খোদ মুহাম্মদ মুইজ্জু।

পাশাপাশি মুইজ্জু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘যারা ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছেন এবং এভাবে সরকার ফেলার চেষ্টা করছেন, তাদের সবাইকে বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। সেই মর্মে তদন্তও শুরু করেছে প্রশাসন।’

সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশ্যে এসেছে, মালদ্বীপের ব্যবহারযোগ্য ডলারের ভান্ডার ফুরিয়ে গিয়েছে। শুধু শূন্য নয়, ‘মাইনাসে’ চলছে সেই ভান্ডার। দেশটির শীর্ষ ব্যাংক ‘ব্যাংক অফ মালদ্বীপ (বিএমএল) তরফে ব্যাংকের দেওয়া ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডগুলি থেকে বিদেশি লেনদেন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরেই দেশের জনগণের মধ্যে আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও নির্দেশ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয় বিএমএল। ব্যবহারযোগ্য ডলারের ভান্ডার ফুরোনোর রিপোর্ট প্রকাশের কয়েক দিন পর মালদ্বীপের মুদ্রা রুফিয়ার কার্ডের সঙ্গে ডলার লেনদেন বন্ধ করে দেয় বিএমএল। ক্রেডিট কার্ডের সীমাও কমিয়ে ১০০ ডলার করে দেওয়া হয়।

সরকার উৎখাতের এই অভিযোগ করেছেন মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী মহম্মদ সঈদও। তিনি দাবি করেছেন, দ্বীপরাষ্ট্রের আর্থিক অবস্থাকে ব্যাহত করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এর পরেই গর্জে ওঠে দ্বীপরাষ্ট্রের সরকার। দলীয় বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু জানান, পুরো বিষয়টি সম্বন্ধে তিনি অবগত ছিলেন না। তার পরামর্শ না নিয়েই বিএমএলের তরফে এই ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি মুইজ্জু জানান, তিনি শীঘ্রই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন।

মুইজ্জু সরকার এ-ও অভিযোগ করেছে, এই সব সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মালদ্বীপে আর্থিক বিপর্যয় আনতে চাইছেন বিরোধীরা। চেষ্টা চলছে সরকার ফেলে দেওয়ার। তিনি বিএমএলের পদক্ষেপকে তার সরকার উৎখাতের ‘অবৈধ প্রচেষ্টা’ বলে নিন্দাও করেছেন।

পুলিশও জানিয়েছে, অনলাইনে ইতিমধ্যেই মুইজ্জু সরকারের সমালোচনা শুরু হয়েছে। সমাজমাধ্যমে কয়েকশো ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মানুষকে সরকার উৎখাতের জন্য রাস্তায় নামার উস্কানি দেওয়া হচ্ছে৷

সংবাদ সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, আর্থিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুইজ্জুকে ক্ষমতাচ্যুত করার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে মালদ্বীপের পুলিশ। সোমবার গভীর রাতে পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আর্থিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার যে অভিযোগ, তার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’

যদিও বিরোধীদের একাংশের দাবি, বিএমএলের যে পরিচালনা পর্ষদ, তাতে মুইজ্জু সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। আর সেই কারণেই সরকারপক্ষকে বিষয়টি জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি বিএমএল।

অর্থসূচক/এএকে/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.