গত কয়েক বছরে সুশাসনের অভাবে ভঙ্গুর অবস্থায় দেশের ব্যাংক খাত। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে ও আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করতে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংকিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু করুণ দশা থেকে দেশের ব্যাংক খাতকে দাঁড় করাতে কমিশন নয়, শক্তিশালী ব্যাংকিং টাস্কফোর্স করতে যাচ্ছে সরকার।
সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই এই টাস্কফোর্স গঠন করে সংস্কারকাজ শুরু করা হবে। যাদের কাজ হবে ব্যাংকগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
তথ্য মতে, টাস্কফোর্সের দায়িত্ব হবে ব্যাংকগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ। এই টাস্কফোর্সের রিপোর্টের সংখ্যা হতে পারে ১০-এর অধিক। তারা যেসব সমস্যা চিহ্নিত করবে, সেগুলো সমাধানের পরামর্শও দেবে। এরপর ওই পরামর্শ কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে তাও মনিটর করা হবে। পাশাপাশি যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে নতুন পরিকল্পনাও প্রণয়নের দায়িত্ব থাকবে তাদের। এ ক্ষেত্রে তারা আইন পরিবর্তনসহ অন্যান্য সুপারিশও রাখতে পারে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকিং কমিশন কয়েকটা সুপারিশ দেবে আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে—বিষয়টি এমন কিছু নয়। বর্তমানে ব্যাংক খাতের অবস্থা ভালো নয়। এজন্য আমরা যাদের দায়িত্ব দেব, তারা আর্কিটেক্ট হিসেবে কাজ করলে হবে না, রাজমিস্ত্রির মতো ব্যাংকগুলোকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের কাজ করতে হবে।
টাস্কফোর্স বা ব্যাংকিং কমিশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কীভাবে কাজ করে তা জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, ব্যাংক কমিশনের সাধারণ কাজ হয় তিন ধরনের। সরকারকে তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যাংকের কিছু সংস্কারের প্রস্তাব দেন। কোন কোন ক্ষেত্রে মাঝারি ধরনেরও হতে পারে।
এছাড়াও তিনি বলেন, তারা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যাংকের বিভিন্ন সমস্যা নির্ণয় করে এর সমাধান কী হতে পারে তার বিষয়ে পরামর্শ দেন। কিন্তু যদি কমিশন দীর্ঘমেয়াদি হয়, তখন সমস্যা নির্ধারণ ও সমাধান দেবে। পাশাপাশি তা কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে তার রক্ষণাবেক্ষণও করবে। এক্ষেত্রে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাইরে গিয়ে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করবে কমিশন। এখন সরকার কী চিন্তা করছে, তা কমিশন গঠনের পর বোঝা যাবে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.