বাংলাদেশকে আগাম সতর্কতা না দিয়েই বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত

পরম বন্ধু নামে জানলেও, বর্ষায় শত্রুর চাইতেও ভয়াবহ হয়ে উঠে প্রতিবেশী দেশ ভারত। বাঁধ দিয়ে প্রয়োজনের সময় পানি থেকে বঞ্চিত করলেও, বর্ষায় বাঁধ খুলে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে ভারত।

এবার কোন রকম আগাম সতর্কতা ছাড়াই ত্রিপুরা রাজ্যে গোমতী নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের ডম্বুরা লেকের বাঁধ খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে ঢলের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে কুমিল্লা, বি-বাড়িয়া, ফেনী, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি ও লক্ষ্মীপুরের বেশ কিছু অঞ্চল।

তবে জরুরি অবস্থায় আন্তর্জাতিক নদীগুলোর বাঁধ খুলে দায়ের আগে, বাঁধের নিম্নাঞ্চলে থাকা দেশগুলোর সরকারকে জানাতে হয়। যেন সরকার বিপদগ্রস্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের আগে থেকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু ডম্বুরা লেকের বাঁধ খুলে দেয়ার আগে, বাংলাদেশকে কোন সতর্কতা বার্তা পাঠায়নি ভারত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এর ফলে গোমতী নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের ডম্বুরা লেকের বাঁধ খুলে দেওয়ায় ত্রিপুরার বন্যার পানি নেমে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে।

এদিকে গোমতী ও শাখা নদীগুলোর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীর চরের সকল অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কুমিল্লায় বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি। এতে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আতঙ্কে বাসাবাড়ি ছাড়ছে অনেকেই।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোথাও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারী বর্ষণ ও ভারতীয় থেকে আসা ঢলে সীমান্তবর্তী চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাকড়ী নদীর বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে সেখানকার লাখো মানুষ। নাঙ্গলকোট উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের ডাকাতিয়া নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো আজ ২ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে।

গোমতী নদীর তীরবর্তী বুড়িচং উপজেলার কিং বাজেহুরা গ্রামে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে।

এছাড়া পার্শ্ববর্তী কাহেতরা এলাকায় গোমতী নদীর বাঁধে ফাঁটল তৈরি হওয়া সেখানে মেরামত কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে শতাধিক পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোমতী নদী তীরবর্তী দেড় হাজারেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্রোতের তোড়ে ভেঙে গেছে গ্রামের সংযোগ সড়ক। কৃষিজমি তলিয়ে গেছে বানের পানিতে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.