অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আজ মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন কারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুসারে, যোগদানের তারিখ থেকে গভর্নর হিসেবে তার মেয়াদ হবে ৪ বছর। যোগাদানের আগে তাঁকে অন্যন্য প্রতিষ্ঠান-সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগ করতে হবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর সদ্য পদত্যাগী গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
গভর্নর পদে আহসান মনসুরের নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়স সংক্রান্ত আইনী সমস্যা ছিল। বিদ্যমান আইন অনুসারে, ৬৭ বছরের বেশি বয়সী কারোর গভর্নর হওয়ার সুযোগ নেই। আজ বিকালে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ শর্তটি প্রত্যাহার করা হয়।
আজ বিকালে অনুষ্ঠেয় অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রীসভার বৈঠকে গভর্নর পদের বয়সজনিত শর্ত শিথিলের সিদ্ধান্ত হতে পারে।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ছাত্র-জনতার দাবি এবং খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যাপক বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে গত ৯ আগস্ট গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তার বিরুদ্ধে বিদায়ী আওয়ামীলীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক অসাধু ব্যবসায়ী, বিশেষ করে বিতর্কিত এস আলম গ্রুপকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলো ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হওওয়া সত্ত্বেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। প্রায় প্রতিটি ব্যাংএর চলতি হিসাব ঋণাত্মক। আইন অনুসারে, এ ধরনের ব্যাংকের কোনো ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারার কথা নয়। আব্দুর রউফ তালুদারের প্রভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন টাকা ছাপিয়ে এই ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রেখেছে। এছাড়া এসব আলম গ্রুপ বেনামী ঋণের আড়ালে এসব ব্যাংক থেকে বিপুল টাকা সরিয়ে নেওয়ার পরও বাংলাদেশ ব্যাংক নির্বিকার থেকেছে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বর্তমানে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ড. আহসান এইচ মনসুর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী। তিনি ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন।পরের বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ১৯৭৭ সালে ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। আর ১৯৮২ সালে ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন।
ড. মনসুর ১৯৮১ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ফিসকাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগে কাজ করেছেন।
তিনি ১৯৮৯ সালে অর্থমন্ত্রী ওয়াহিদুল হকের অর্থ উপদেষ্টা নিযুক্ত হন এবং ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত, তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.