বৈশ্বিক সুদের হার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বেশি পরিমাণে ঋণ নেওয়ায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধ আগের বছরের তুলনায় ২৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে তিন দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। এই সময়ে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ ৪৪ শতাংশ বেড়ে এক দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (এমটিএমপিএস) শীর্ষক প্রতিবেদনে অর্থ মন্ত্রণালয় এমন তথ্য জানিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী বছরগুলোয় সুদ পরিশোধ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। জাতীয় বাজেটের শতাংশ হিসাবে বিদেশি সুদ দেওয়ার অনুপাত ২০২১-২২ অর্থবছরে শূন্য দশমিক নয় শতাংশ থেকে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে দুই দশমিক ছয় শতাংশে উন্নীত হবে। এটি বাজেটে বিদেশি ঋণের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে তুলে ধরে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বেড়ে যাওয়ার দুটি বড় কারণের একটি হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী বাজারভিত্তিক সুদের হার বেড়ে যাওয়া। অন্য কারণটি হলো, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আসার ফলে বিদেশ থেকে রেয়াতি বা কম সুদে ঋণ পাওয়া ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমে যাওয়ায় বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে। গত অর্থবছরে টাকার হিসাবে বিদেশি ঋণ পরিশোধ প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে ৩৭ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা হয়েছে।
কয়েক দশক আগেও সরকার বছরে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার করে বিদেশি ঋণ নিত। এখন তা প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশের মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৮ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর পরিমাণ দুই দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দিয়েছে দুই দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার।
দ্বিপাক্ষিক অংশীদারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে জাপান। ঋণের পরিমাণ এক দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার। রাশিয়া দিয়েছে এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার।
এছাড়াও, এডিবি দুই দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংক দুই দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার, জাপান দুই দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইবি) ৪০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.