গাজায় বাস্তুচ্যুত আরও দেড় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা দিন দিন বেড়েই চলছে। গাজার খান ইউনিস শহর থেকে নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন দেড় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পর তারা পালিয়ে যেতে শুরু করেন। বুধবার (২৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার থেকে গাজার খান ইউনিস শহর থেকে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে বলে জাতিসংঘের দুটি সংস্থা জানিয়েছে। মূলত গাজা উপত্যকার দক্ষিণে অবস্থিত খান ইউনিস শহরটি নতুন করে ইসরায়েলি সামরিক আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

ইসরায়েলের দাবি, খান ইউনিস শহরে ‘নিজেদের বাহিনীকে পুনরায় একত্রিত করার জন্য হামাসের চলমান প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করার’ জন্য তারা সেখানে আক্রমণ চালাচ্ছে।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) গত সোমবার খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত ফিলিস্তিনিদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে আদেশ জারি করে। এছাড়া নিরাপদ এলাকা বলে মনোনীত আল-মাওয়াসি মানবিক অঞ্চলের আকারও হ্রাস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তাদের দাবি, হামাস যোদ্ধারা ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং রকেট নিক্ষেপ করতে’ এই এলাকাকে ব্যবহার করছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরায়েলি অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ওই এলাকায় অন্তত ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর একজন কর্মকর্তা বিবিসি’র টুডে প্রোগ্রামকে বলেছেন, এলাকা ছেড়ে যেতে সর্বশেষ আদেশ জারি করার পর গত সোমবার থেকে আনুমানিক ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ খান ইউনিস থেকে পালিয়ে গেছেন।

লুইস ওয়াটারিজ বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশেরও বেশি এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে বা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নো-গো জোন হিসাবে মনোনীত করেছে।’

মঙ্গলবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলোকে বানি সুহাইলা জেলার অনেক ভেতরে হামলা চালাতে দেখা গেছে। এছাড়া আল-কারার এলাকায়ও অভিযান চালানো হচ্ছে। কিছু বাসিন্দা খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে বাস্তুচ্যুত মানুষের শিবিরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, অন্যরা আশ্রয় নেওয়ার জন্য হাসপাতালে গেছেন।

ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) বলেছে, জনগণের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে খান ইউনিস থেকে দে লাখ মানুষ পালিয়ে গেছে বলে তারা দেখতে পেয়েছে।

ওয়াটারিজ বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা দেখছি লোকেরা দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিসের পশ্চিমে চলে যাচ্ছে। এই দুটি এলাকা ইতোমধ্যেই অত্যন্ত জনবহুল। সেখানে আশ্রয় এবং অন্যান্য পরিষেবা পাওয়ার সুযোগও অত্যন্ত সীমিত।’

অন্যদিকে এক বিবৃতিতে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তারা ‘গত ২৪ ঘণ্টা ধরে খান ইউনিস এলাকায়’ অভিযান চালিয়েছে এবং ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস’ করার পাশাপাশি ‘বেশ কিছু সন্ত্রাসীকে নির্মূল করেছে’।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.