ছেলের ‘মিথ্যাচার’ বাইডেনের প্রচারণায় প্রভাব ফেলবে?

জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন ২০১৮ সালে আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযুক্ত হয়েছেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টের সন্তানের অভিযুক্ত হওয়ার এটিই প্রথম ঘটনা৷

.৩৮ ক্যালিবার রিভলভার কেনার সময় হান্টার বাইডেনকে যে ফরম পূরণ করতে হয়েছিল সেখানে তিনি লিখেছিলেন, তিনি মাদকাসক্ত নন৷ তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগও আনা হয়েছিল৷

৫৪ বছর বয়সি হান্টার বাইডেন নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন৷ আগ্নেয়াস্ত্র কেনার ঐ সময়টায় তিনি মাদকাসক্তি থেকে বের হয়ে আসার পথে ছিলেন বলে দাবি করেছেন৷ তবে ১২ সদস্যের জুরি হান্টার বাইডেনকে অভিযুক্ত করেছে৷ ফলে তার সর্বোচ্চ ২৫ বছরের শাস্তি হতে পারে৷ অবশ্য প্রথমবার অভিযুক্ত হওয়ায় সেটি হওয়ার সম্ভাবনা কম৷ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শাস্তির বিষয়ে রায় দেওয়া হবে৷

ছেলে অভিযুক্ত হওয়ার পর তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন৷ এক বিবৃতিতে তিনি ছেলের প্রতি ‘ভালোবাসা ও সমর্থন’ জানান৷ ‘আমি প্রেসিডেন্ট, কিন্তু আমি একজন বাবাও’- বলেন তিনি৷

হান্টার বাইডেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রথম স্ত্রীর সন্তান৷ তার প্রথম স্ত্রী ১৯৭২ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান৷ ঐ দুর্ঘটনায় হান্টার বাইডেন ও তার ভাই বৌ বাইডেন বেঁচে গেলেও তাদের বোন মারা যায়৷ ২০১৫ সালে বৌ বাইডেন মস্তিষ্কের ক্যানসারে মারা যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন, আর হান্টার বাইডেন মাদক ও অ্যালকোহলের দিকে ঝুঁকেছিলেন৷

ব্যবসার নথিপত্র গোপন করার দায়ে দুই সপ্তাহ আগে অভিযুক্ত হয়েছেন আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের প্রতিপক্ষ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এবং চীন ও ইউক্রেনের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক চুক্তি বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করে রিপাবলিকানরা অনেকদিন ধরেই জো বাইডেনকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছিল৷

মঙ্গলবার হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে রায়ের পরও ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণা দল বাইডেন পরিবারকে নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে৷ ট্রাম্প নিজেও ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিতর্কের সময় হান্টার বাইডেনকে নিয়ে বক্তব্য দিয়ে ভোটারদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প৷ কিন্তু এতে উলটো জো বাইডেনের লাভ হয়েছিল৷ কারণ, তিনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, এমন একজন ছেলের বাবা হয়ে তিনি গর্বিত যে আসক্তি থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে৷

প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জুলিয়ান জেলিজার মনে করছেন, মঙ্গলবারের রায়টি হান্টার বাইডেনকে নিয়ে হলেও ট্রাম্প এর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে জড়ানোর চেষ্টা করবেন৷ তিনি বলেন, নিজের বিরুদ্ধে রায়ের পর ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থায় রাজনীতিকরণের অভিযোগ এনেছিলেন৷ কিন্তু হান্টার বাইডেনের মামলা প্রমাণ করছে, মার্কিন বিচারব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর আছে৷

বারাক ওবামার সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করা স্ট্র্যাটেজিস্ট ডেভিড অ্যাক্সেলরড ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না ছেলের আসক্তি ও তার কর্মকাণ্ডের জন্য ভোটাররা জো বাইডেনকে দায়ী করবেন৷’ সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, এপি

অর্থসূচক/এএইচআর