ভারতের জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলকেন্দ্রীক অনিশ্চয়তার প্রভাবে রীতিমত দোল খাচ্ছে দেশটির পুঁজিবাজার। নির্বাচনী বিভিন্ন জরিপ সংস্থার পূর্বাভাস আর ভোটের অনিশ্চিত ফলাফলের দু:শ্চিন্তায় যেন সাগরের ঢেউয়ের মতো উথালপাতাল দেখা যাচ্ছে দেশটির সূচকগুলোতে। ক্ষমতাসীন বিজেপি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আবারও ক্ষমতায় ফিরছে বিভিন্ন বুথফেরত জরিপের এমন পূর্বাভাসে গতকাল (০৩ জুন) আড়াই হাজার পয়েন্ট উত্থান হয় বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক এসঅ্যান্ডপি বিএসই সেনসেক্সের।
তবে আজ মঙ্গলবার (০৪ জুন) নির্বাচনী ফলাফল সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে লেনদেন শুরুর কিছুক্ষণের মাঝেই সেনসেক্স ২ হাজার পয়েন্টে কমে যায়। এরপর সময়ের সাথে সাথে সূচক পতন বাড়তে থাকে। সোয়া ১১টা নাগাদ সূচকটি ৭৩ হাজারের নিচে নেমে আসে। সূচক কমে যায় প্রায় ৩ হাজার ৮০০ পয়েন্ট বা সাড়ে ৪ শতাংশ। তবে পরবর্তী সময়ে সূচক কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়। এদিন পতনের মুখে পড়েছে নিফটিও। এ সূচকটি এখন পর্যন্ত কমেছে প্রায় ১ হাজার ১২৯ পয়েন্ট। এর ফলে নিফটি নেমেছে ২২ হাজার ৯৫ পয়েন্টে।
সেনসেক্স এবং নিফটি বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক। এদের ওঠাপড়ার উপর নির্ভর করে পুঁজিবাজার এবং শেয়ারদর।
এর আগের কার্যদিবসে সেনসেক্সের লেনদেন শেষ হয়েছিলো ৭৬ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে। আজ লেনদের শুরুর প্রথম ঘন্টায় সূচকটি হারিয়েছে চার শতাংশেরও বেশি পয়েন্ট। আগের কার্যদিবসে এনএসই নিফটির লেনদেন শেষ হয়েছিলো ২৩ হাজার ২৬৩ পয়েন্টে। নিফটিও চার শতাংশের বেশি পয়েন্ট হারিয়েছে।
গত ১৯ এপ্রিল ভারতে লোকসভার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে থেকে দেশটির পুঁজিবাজার প্রবল গতিতে উর্ধমুখী হতে থাকে। তখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন বিজেপি ও তার এনডিএ জোটের ক্ষমতায় বহাল থাকার সম্ভাবনা তীব্র ছিল। সরকার পরিবর্তন না হলে নীতিমালা ও উন্নয়নের বর্তমান ধারা বহাল থাকবে এমন আশাবাদে উজ্জীবিত হয়ে বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। কিন্তু প্রথম তিন ধাপের ভোট শেষ হওয়ার পর বিজেপি জোটের ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা ফিকে হতে থাকলে বাজার কিছুটা গতি হারায়। তবে এমডিএর ৩৫০ এর বেশি আসন পাবার খবরে আবারও লাফিয়ে বাড়তে থাকে ভারতের পুঁজিবাজারের সূচকগুলো। কিন্তু নির্বাচনের সর্বশেষ ফলাফল হাতে পাওয়ার আগে কিছুটা চাপে পরতে হয় ক্ষমতাসীন বিজেপিকে। অসংখ্য আসন চলে যেতে থাকে প্রতিদ্বন্দ্বি দলগুলোর কাছে। আর এর প্রভাবেই আজ বড় পতনের মুখে পড়েছে দেশটির পুঁজিবাজার।
অর্থসূচক/এমআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.