ইরান-আজারবাইজান সীমান্তবর্তী একটি জলাধার উদ্বোধন করে ফেরার পথে ইরানের প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের ‘দিরমাজ’ জঙ্গলের আকাশে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে দুর্ঘটনা কবলিত হয়। হেলিকপ্টারটিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তাবরিজের গভর্নর ও তাবরিজের জুমার নামাজের ইমাম ছিলেন।
এদিকে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর প্রচারিত হওয়ার ফলে সারা ইরানে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রেসিডেন্ট রায়িসি স্বল্প সময়ের দায়িত্ব পালনকালে ইরানি জনগণের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। বিশেষ করে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই দলে দলে মসজিদসহ অন্যান্য ধর্মীয় স্থানে সমবেত হয়ে প্রেসিডেন্টের সুস্থতার জন্য দোয়া করতে থাকেন। কিন্তু ইরান সময় সোমবার সকাল ৭টার দিকে খবর আসে হেলিকপ্টারের কোনো আরোহী বেঁচে নেই।
কে হচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট?
ইরানের সংবিধানের ১৩১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে- মৃত্যু, বরখাস্ত, পদত্যাগ কিংবা অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রেসিডেন্ট দুই মাসের বেশি অনুপস্থিত থাকলে অথবা প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর কোনো কারণে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেরি হলে সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনক্রম প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। এরপর ভাইস প্রেসিডেন্ট, পার্লামেন্ট স্পিকার ও বিচার বিভাগের প্রধানের সমন্বয়ে গঠিত পরিষদ পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।
বর্তমানে ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মোখবের। গতকাল হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর প্রচারিত হওয়ার পরপরই তার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক হয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা অনুমোদন করলে এখন তিনি আগামী ৫০ দিনের জন্য প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের হাতে চলে যাবে রাষ্ট্রের দায়িত্বভার।
এখন প্রেসিডেন্ট রায়িসির নিহতের পর ইরান উদ্ভূত পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করে এবং গত প্রায় পাঁচ দশকের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যায় সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ইরান বিগত বছরগুলোতে এর চেয়েও কঠিন সময় খুব ভালোভাবে পার করে এসেছে এবং নিজের বয়সের পূর্ণতা প্রমাণ করেছে। পার্সটুডে
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.