যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় ডেঙ্গুতে বেশি মৃত্যু হয়েছে: তাপস

যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুহার বেশি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ভূতের গলি সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র শেখ তাপস এ মন্তব্য করেন।

ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুহার নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, গতকালও আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ এ বিষয়ে একটা সভা করেছি। যে বিষয়টা সবচেয়ে পীড়াদায়ক তা হলো যে, গত বছর মৃত্যুর হার খুবই বেড়ে গিয়েছিলো। সেই ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, স্বাস্থ্যসেবাকে আরও নিশ্চিত করতে হবে। কারণ গতবছর কিছু বিষয় আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক রোগীদেরকে প্রাথমিক পর্যায়ে বলা হয়েছে যে, হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করলেও চলবে। পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে সেই রোগীর পরিস্থিতি আরও বেশি খারাপ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে পরে তিনি যখন ভর্তি হয়েছে তখন দেখা যায় তাকে সেভাবে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া যায় না। এতে করে মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়গুলো আমরা গতকালের সভায় তুলে ধরেছি।

এ সময় পৃথিবীর অনেক দেশের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে শেখ তাপস বলেন, ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বে বিশেষ করে, যে সকল দেশে মৌসুমী বৃষ্টি হয় তথা বর্ষা প্রবণ অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এডিস মশা বেশি হয়। সেসব দেশের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে আমরা দেখেছি, তাদের তুলনায় আমাদের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে, আমাদের দেশে রোগীরা স্বাস্থ্যসেবাটা সঠিকভাবে পাচ্ছে না। ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজারের মতো হলেও মৃত্যু হয়েছিল ২০০ এর নিচে। গতবছর ঢাকা শহরে রোগীর সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ১০ হাজার। কিন্তু মৃত্যু ১ হাজার ৭০০ এর বেশি। পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে, স্বাস্থ্যসেবাকে আমাদের আরও গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করবো। সে বিষয়ে সিটি করপোরেশন পর্যাপ্ত কাজ করছে। আমাদের পরিধি অনেক বৃদ্ধি করেছি। আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সময় বৃদ্ধি করেছি। আমাদের কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কিনা, কর্মপরিকল্পনা পরিপালন করছে কিনা ইত্যাদি বিষয় আমরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে তদারকি করছি। সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি, আমাদের প্রয়াস বা কর্মপরিকল্পনা ঠিক আছে। কিন্তু আমাদেরকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে একটি মৃত্যুও না ঘটে। বিশেষ করে আমরা গতবার লক্ষ্য করেছি, ছোট্ট শিশুরা অনেক বেশি আক্রান্ত হয়েছে এবং অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছে। এটা আসলে অত্যন্ত পীড়াদায়ক। আক্রান্ত ও মৃত্যুহার কমাতে যৌথভাবে আরও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বলেন তিনি।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও বেশি কঠোরতা দেখানো হবে বলেও জানান তিনি।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.