ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে ইসরায়েলের সেনাদের। লড়াইয়ে এখনো পর্যন্ত ৯০০ জনের বেশি ইসরায়েলি এবং ৬৮৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল লক্ষ্য করে এখনো রকেট ছুঁড়ছে হামাস। অন্যদিকে ইসরায়েল গাজাকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই ইসরায়েলের অন্য সীমান্তে রকেট হামলা চালিয়েছে লেবাননের হেজবোল্লাহ।
ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা হামাসের পরিকাঠামো লক্ষ্য করেই আক্রমণ চালিয়েছে। তবে বেসরকারি হিসেব এর চেয়ে অনেক বেশি। গাজায় আরও বেশি ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অনেকেই জানিয়েছেন।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। অপরদিকে গাজা উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৬৮৭ জন।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান বিমান হামলার কারণে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এদিকে হামাসের হামলার জবাবে গাজায় আবাসিক এলাকা, সুড়ঙ্গ, মসজিদ এবং হামাস কর্মকর্তাদের বাড়িতে বিমান হামলা করছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী আকাশ থেকে একাধারে বোমা ফেলছে। এর ফলে হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গাজার আবাসিক ভবনে বোমাবর্ষণ করেছে ইসরাইলি বাহিনী।
হেজবোল্লাহর দাবি, ইসরায়েল লেবাননে রকেট হামলা চালিয়েছিল। ওই ঘটনায় অন্তত তিনজন হেজবোল্লাহ যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তারপরেই দুইটি ইসরায়েলি সেনা পোস্ট লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হয়।
ইসরায়েল জানিয়েছে, ওই আক্রমণে তাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ফিলিস্তিনি জেহাদি গ্রুপ লেবাননের সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে ঢোকার চেষ্টা করছিল। গাজায় লড়াই শুরু হওয়ার পরেই লেবাননের দিক থেকে তাদের সমর্থনে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। সে কারণেই লেবাননে হেজবোল্লাহ কাঠামো লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। হেজবোল্লাহ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত শনিবার ইসরাইলি সেনাদের দীর্ঘদিনের আগ্রাসনের জবাবে বিশাল আকারের সামরিক অভিযান শুরু করে ফিলিস্তিনিরা। অল্প সময়ের ভেতরে ইসরাইলের অভ্যন্তরে তারা পাঁচ হাজারের বেশি রকেট নিক্ষেপ করে। ফিলিস্তিনিদের ওপর দীর্ঘদিনের দমন-পীড়নের জেরে এই হামলা চালাচ্ছে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। গাজা ভূখণ্ডের যে অংশটুকু এখন পর্যন্ত টিকে আছে, ইসরায়েলের হাত থেকে এরাই রক্ষা করে আসছে। এই অভিযানে ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের সেনাসহ বহু অবৈধ বসতি স্থাপনকারীকে আটক করে গাজায় নিয়ে যায়।
এর আগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের হামলা হয়েছিল ৫০ বছর আগে ১৯৭৩ সালে। তবে সে হামলা ফিলিস্তিনিরা করেনি বরং মিশর ও সিরিয়া যৌথভাবে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে তাদের হাতছাড়া হয়ে যাওয়া ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করতে ওই হামলা চালিয়েছিল। ইহুদিদের ইওম কিপ্পুর ছুটির দিনে ওই হামলা হয়েছিল বলে তাকে ইওম কিপ্পুর যুদ্ধ নামেও অভিহিত করা হয়। ওই যুদ্ধ ১৯৭৩ সালের ৬ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়েছিল। সূত্র: আল-জাজিরা, পার্সটুডে, রয়টার্স, এপি, এএফপি
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.