চলতি জুন মাসের প্রথম ৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৭ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা ধরে যার পরিমাণ ৬ হাজার ২৪৬ কোটি ১২ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, জুন মাসের প্রথম ৯ দিনে মোট ৫৭ কোটি ৫৬ লাখ ডলার দেশে এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪২ কোটি ৭৪ লাখ ডলার এবং বিদেশিখাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
আলাচিত সময়ে ৯ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়ীত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেসরকারি খাতের বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, কমিউনিটি ব্যাংক লিমিটেড, সিটিজেনস ব্যাংক পিএলসি। বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ওয়ারি ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংক এনএ।
এদিকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। তবে সামনে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা রয়েছে। এ কারনে এসময় রেমিট্যান্স বেশি পরিমাণ আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।
দুই মাস দুই বিলিয়ন ডলার করে এলেও পরের মাস থেকে কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ যা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি চলে আসে। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার বা ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। আর জানুয়ারি মাসে আসে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ডলার, মার্চে ২০২ কোটি ডলার, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি ডলার এবং মে মাসে ১৬৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠায় প্রবাসীরা।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম এগারো মাসে (জুলাই-মে) রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৯৪১ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।
রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.