আক্রমণাত্মক ফিল্ড সেট আপে প্রতিপক্ষকে শুরু থেকেই চাপে রাখার চেষ্টা সাকিব আল হাসানের। তাতে সফলতা এলো শুরুর দিকেই। দুই পেসার এবাদত হোসেন ও শরিফুল ইসলামের কল্যাণে ১০ ওভারে সাজঘরে আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনার। এরপর আইরিশ মিডল অর্ডার খানিকটা প্রতিরোধ গড়তে চাইলেও তাতে বাধা তাইজুল ইসলামের। ফলে ৩ উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করল আয়ারল্যান্ড। তবে লাঞ্চের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে আইরিশদের হয়ে লড়ে যান হ্যারি ট্যাক্টর।
এদিন মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছয়জন জেনুইন বোলার নিয়ে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। শুরুতেই আক্রমণে এসেছেন শরিফুল ইসলাম এবং খালেদ আহমেদ। ফিল্ডিংয়ে চারজন স্লিপ এবং একজন ওয়াইড স্লিপ নিয়ে দিন শুরু করেছে দলটি।
আগ্রাসী এই মানসিকতার সামনে বেশীক্ষণ টিকতে পারেনি আইরিশদের ওপেনিং জুটি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ফিরে গেছেন আয়ারল্যান্ডের ওপেনার মুরে কমিন্স। ১০ বলে ৫ রান করে শরিফুলের বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হয়ে ফিরে গেছেন তিনি। সঙ্গী কমিন্স ফেরার পর আরও সতর্ক হয়ে খেলতে থাকেন জেমস ম্যাককলাম। ধীরে ধীরে দলের রান বাড়ানোর প্রচেষ্টায় থাকেন তিনি। যদিও এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। দশম ওভারের শেষ বলে তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান এবাদত। তার বলটি ম্যাককলামের ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় স্লিপে চলে যায়। প্রথমে হাত ফসকালেও পরবর্তীতে বলটি তালুবন্দী করে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
৩৪ বলে একটি চারে ১৫ রান করে বিদায় নেন ম্যাককলাম। ২৭ রানে দুই উইকেট হারায় আইরিশরা। দ্রুত দুই ওপেনাকে হারানোর পর অ্যান্ড্রু বালবার্নি ও হ্যারি টেক্টরের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়েছিল আয়ারল্যান্ড। তবে চমৎকার এক ডেলিভারিতে তাদের জমে যাওয়া জুটি ভেঙে দেন তাইজুল।
অনেকটা সময় ক্রিজে থাকলেও সহজে রান পাচ্ছিলেন না বালবার্নি। সুইপ করে চাপ কিছুটা সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক। সেই শটই কাল হয় তার জন্য। ফুল লেংথ বল ব্যাটের কানা এড়িয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদনে সাড়া দিলে একটু সময় নিয়ে রিভিউ নেন বালবার্নি। বল আঘাত হানতো অফ স্টাম্পে। তবে ইম্প্যাক্ট ‘আম্পায়ার্স কল’ ছিল বলে নষ্ট হয়নি আইরিশদের রিভিউ।
বালবার্নির বিদায়ে ভাঙে ৭১ বল স্থায়ী ২১ রানের জুটি। আইরিশ অধিনায়ক ৫০ বলে করেন ১৬ রান। ইনিংসে নেই কোনো বাউন্ডারি। এরপর ক্রিজে নেমে কার্টিস ক্যাম্ফার ও টেক্টর মিলে প্রথম সেশনের খেলা শেষ করেন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাইজুল, এবাদত ও শরিফুল। পেসারদের কল্যাণে প্রথম সেশনটা গিয়েছিল বাংলাদেশের পকেটে। কিন্তু লাঞ্চের পর হ্যারি ট্যাক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফারের প্রতিরোধ চিন্তার ভাজ ফেলেছিল স্বাগতিকদের কপালে। যদিও মেহেদি হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে তা দূর হয়েছে দ্রুতই। স্পিনারদের ঘূর্ণিতে দ্বিতীয় সেশনে আরও ৩ উইকেট তুলে নিয়ে চা বিরতিতে গিয়েছে বাংলাদেশ।
৬৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লাঞ্চ থেকে ফিরে উল্টো বাংলাদেশের বোলারদের পরীক্ষা নিতে শুরু করেন ক্যাম্ফার ও ট্যাক্টর। দেখে শুনে খেলে দ্রুতই দলীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন দুজন। সঙ্গে ট্যাক্টর হাটতে থাকেন ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরির পথেও। তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। ৮০ বলে ফিফটি করার পথে টেক্টর মেরেছেন এক ছক্কা ও ছয় চার। এরপর আর এগোতে পারেননি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। মেহেদী হাসান মিরাজের চমৎকার এক ডেলিভারিতে বাজে শটে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। পরের ওভারে ক্রিজে আসা পিটার মুরকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তাইজুল। এরপর ক্যাম্ফারকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে আইরিশদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেন মিরাজ। ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন ক্যাম্ফার।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.