রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসা হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘শামসুজ্জামান শামসকে রমনা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
বুধবার মধ্যরাতে রমনা থানায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান প্রধান আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়। সেই মামলাতেই শামসুজ্জামানকে আজ আদালতে আনা হয়েছে।
এর আগে গতকাল ২৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকার ভাড়াবাসা থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৩২ মিনিটে তেজগাঁও থানায় শামসের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া। এটি রাত সোয়া ২টায় মামলা হিসেবে রুজু হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। একই সঙ্গে সংবাদটি দৈনিক প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করে। সংবাদটিতে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি, ওই শিশুটির নাম জাকির হোসেন। পত্রিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির হোসেন বলে, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো।’
এতে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদটি দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন। এই ঘটনায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের সোনালী গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণসহ বহির্বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মহান স্বাধীনতা দিবসের দিনে এই সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বাধীনতার অর্জন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
উল্লেখ্য, হলিআর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. রবিউল করিমের ছোট ভাই শামসুজ্জামান।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.