কিউআর কোডে ঝামেলা, আগ্রহ নেই লেনদেনে

আর্থিক লেনদেন ও নগদ টাকার ব্যবহার কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এলক্ষ্যে সম্প্রতি ব্যাংকপাড়া মতিঝিলে চালু করা হয় ‘বাংলা কিউআর কোড’। তবে চা দোকানি, ফল বিক্রেতা, মুচি, মুদি দোকানদার ও হোটেলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এই পদ্ধতি বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় খুচরা টাকা হিসাব থেকে তুলতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। একই সঙ্গে রয়েছে টাকা তোলার বাড়তি খরচ। এসব কারণে আগ্রহ কমছে ক্রেতা ও বিক্রেতার।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) মতিঝিল এলাকা ঘুরে সরেজমিনে এসব চিত্র দেখা যায়।

দেখা যায়, সম্প্রতি মতিঝিলে হাজারের বেশি দোকানে কিউআর কোড সরবরাহ করা হয়। তবে এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে লেনদেনে গতি ফেরেনি। এখনো আগের মতোই নগদ টাকায় চলছে লেনদেন। দোকানিরা কিউআর কোড ফেলে রেখেছেন চোখের আড়ালে।

এদিন বিক্রেতারা বলেন, লেনদেনের এই পদ্ধতিটি ভালো। তবে অনেক ঝামেলাও রয়েছে। এক হাজার টাকার নিচে হলে আমরা টাকা তুলতে পারি না। আবার টাকা তুলতে গেলে খরচ কেটে রাখে। এতে আমাদের আয়ের পরিমাণ কিছুটা কমে যাচ্ছে। তাই নগদ টাকা নিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। হিসাব খুলে দেওয়া হয়েছে মাত্র দশ দিন হলো। এখনো ক্রেতাদের কিউআর কোডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধে কোনো আগ্রহ নেই। যে পরিমাণ লেনদেন হচ্ছে তা খুবই কম।

ইয়াসির নামের এক ক্রেতা বলেন, খুচরা টাকার বিল মোবাইলে দিতে ঝামেলা হয়। তাই নগদ টাকা দিতে হয়। এছাড়া এই মাধ্যমে পেমেন্ট করতে অনেক সময় সামান্য বাড়তি খরচ হয়। এসব কারণে নগদ টাকায় পরিশোধ করি।

এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি নগদ লেনদেনবিহীন বাংলাদেশ বা ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ার যাত্রা শুরু হয়। রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় প্রায় ১২শ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছে বাংলা কিউআর কোড সরবরাহ করা হয় সেদিন। এ লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশের ১০টি ব্যাংক এবং ৩টি এমএফএস প্রতিষ্ঠান।

এদিন বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ক্যাশলেস বা নগদ টাকার ব্যবহার কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অ্যাপে বাংলা কিউআর কোডের মাধ্যমে সব ব্যাংকের গ্রাহক পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে যে কোনো ব্যাংকের অ্যাপ থাকলেই চলবে। গ্রাহকদের ব্যাংকের অ্যাপ বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের অ্যাপ দিয়ে পণ্য কেনাবেচায় উদ্বুদ্ধ করতেই এমন উদ্যোগ।

এ উদ্যোগে যুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে- এবি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, পূবালী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংক। এছাড়া রয়েছে এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশ, এমক্যাশ, রকেট ও কার্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ভিসা, মাস্টারকার্ড ও অ্যামেক্স।

অর্থসূচক/সুলাইমান/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.