‘মানুষের ক্ষতি বিবেচনায় ইসলামী ব্যাংকগুলোকে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে’

দেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক এখনও বন্ধ হয়নি। ব্যাংক সমস্যায় পড়লে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক সাপোর্ট দিয়েছে। মানুষের ক্ষতির কথা বিবেচনায় ইসলামী ব্যাংকগুলোকে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকে শেয়ারহোল্ডারের চেয়ে সাধারণ মানুষের বেশি টাকা রয়েছে। বেসরকারি এ ব্যাংকে ১ লাখ ৫১ হাজার কোটি টাকা আমানত রয়েছে। ব্যাংকটি সমস্যায় পড়লে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হতো। মানুষের ক্ষতির কথা বিবেচনায় এনে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় গভর্নর বলেন, দেশের কোনো ব্যাংক সমস্যায় পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক সাপোর্ট দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ইসলামী ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশ্বের যে কোনো ব্যাংক সমস্যায় পড়লে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহায়তা করে থাকে, আমরাও করেছি। দেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক এখনও বন্ধ হয়নি। ব্যাংক সমস্যায় পড়লে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক সাপোর্ট দিয়েছে। সাধারণ মানুষের ক্ষতির কথা বিবেচনায় নিয়েই ইসলামী ব্যাংকগুলোকে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের প্রথম টার্গেট ছিলো আমদানি কমিয়ে আনা। এটা যাতে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের সমান হয়। আর এ টার্গেট পূরনে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিং হয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখেছি। ওভারইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে দেশ থেকে যে অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছিল সেটি আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি। এছাড়া আমাদের নানা উদ্যোগের ফলে আমদানি কমে এসেছে। আমদানি তুলনায় রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বেশি হয়েছে। এতে ডলারের ওপর যে চাপটা পড়েছিল তা কমে এসেছে। আমদানি এলসি খোলা কমানোর প্রভাব আসন্ন রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে প্রভাব পড়বে না। ব্যাংকগুলোকে সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও তিনি বলেন, আমি অনেক চাপের মধ্যে কাজ করে এসেছি। আমি কিংবা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর কোনো ধরনের চাপ নেই। আগে শুনতাম আর্থিক কেউ কেউ নিয়ন্ত্রণ করতো এখন সেটা নেই। যে কোনো ব্যক্তিই হোক আমরা তাকে গ্রাহক হিসেবে দেখি। কোনো ভালো মানের গ্রাহক হলে আমরা তাকে ঋণ দেয়। যাতে সে আরও বড় হতে পারে, উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। ভালো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে আমরা উঠিয়ে আনতে সহযোগীতা করি, ভালো নাহলে ঋণ পায় না। বাংলাদেশ ব্যাংক সবাইকে গ্রাহক হিসেবে দেখে। সুতরাং কোনো চাপের কারনে কাজ করি না, কোনো চাপ নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছি‌লেন বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বস, প্রধান অর্থনী‌তি‌বিদ ড. হা‌বিবুর রহমান, নির্বাহী প‌রিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হকসহ গবেষণা বিভাগের সং‌শ্লিষ্টরা।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.