বিশ্বে ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে কৃষিক্ষেত্রে। এর ফলে বাড়ছে কৃষিঋণ বিতরণ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রথম পাঁচ (জুলাই-নভেম্বর) মাসে কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছে ১২ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল ১০ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
চলতি বছরে কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১১ হাজার ৭৫৮ কেটি টাকা। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। আট বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭৭১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের পাঁচ (জুলাই-নভেম্বর) মাসে আট রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক বিতরণ করেছে ৫ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৭ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।
বৈশ্বিক খাদ্য অর্থনৈতিক সংকট ও খাদ্যের পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীতে খাদ্য সংকট আরও প্রকট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির নির্দেশনা রয়েছে। এ জন্য কৃষি ঋণ বিতরণ বাড়ানোর নির্দেশনা আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের।
এর আগে গত অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হয় ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমত্রার চেয়ে বেশি। গত অর্থবছরের বিতরণকৃত ঋণের ৩৩ লাখ ৪ হাজার ৮১১ জন কৃষি ও পল্লী ঋণের সুবিধা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ লাখ ৯৭ হাজার নারী নিয়েছেন ১০ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। আর চর, হাওরসহ অনগ্রসর এলাকায় কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছে ১৯ কোটি টাকা।
এদিকে করোনা পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই সংকট কাটাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। এলক্ষ্যে সম্প্রতি শিল্প ঋণের চেয়ে কৃষি ঋণ বিতরণে গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কৃষি নীতিমালায় কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে হাঁস পরিপালনের জন্য ঋণ নীতি; চিয়া বীজ, ত্বীন ফল, সুগার বিট চাষে ঋণ নীতি; ভিয়েতনামি হাইব্রিড নারিকেল, কফি ও সুইট কর্ন চাষের ঋণ নীতি। এছাড়া সামুদ্রিক শৈবাল চাষ ও মৎস্য খাতে গলদা চিংড়ি, দলবদ্ধভাবে ঋণ গ্রহণ ও একর প্রতি ফসল উৎপাদনে কৃষি ঋণ নীতি করা হয়েছে।
অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.