মানুষের শক্তি হচ্ছে বড় শক্তি। আর আল্লাহ তো উপরে আছেনই। আল্লাহর দয়া আর মানুষের শক্তি নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে বলে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ক্ষমতা আসার পরই মানুষ উপলব্ধি করতে পেরেছে, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সেবক। উন্নতি করে আওয়ামী লীগ সরকার সেটার প্রমাণ করেছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশেষ আলোচনাসভায় রোববার দুপুরে রাজধানীর খামাবাড়ীস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সরকার প্রধান বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। বিএনপি বিজয়ের অনুষ্ঠান করবে। অথচ তারা এলো আন্দোলন করে সরকার উৎখাত করবে। এতই সোজা! (এটা) আওয়ামী লীগ পারে। আইয়ুব খানকে আমরা উৎখাত করেছি। ইয়াহিয়া খানকে যুদ্ধে পরাজিত করে উৎখাত করেছি। জিয়াকে পাই নাই হাতে; কিন্তু জিয়া যখনই যেখানে গেছে- আন্দোলন তো তার বিরুদ্ধে হয়েছে। এরশাদকে উৎখাত করেছি। খালেদা জিয়া (১৯৯৬ সাল) ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে, তাকে উৎখাত করা হয়েছে। আবার ২০০৬ এ ভোট চুরি করেছিল, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোট করতে চেয়েছিল, সেটাও বাতিল হয়েছে। কাজেই আওয়ামী লীগ পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসলে… হ্যাঁ, চক্রান্ত করতে পারবে, ষড়যন্ত্র করতে পারবে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে আরও কিছু পার্টি দাঁড়াল। বাম, অতি বাম, তীব্র বাম, স্বল্প বাম, সব এক হয়ে গেল। যারা এত বড় বড় কথা বলেন, এত বড় তাত্ত্বিক, তারা ওদের সঙ্গে এক হয়ে যায় কীভাবে? ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে দণ্ডিতদের নেতৃত্ব কীভাবে মেনে নেয়! সেলুকাস, বিচিত্র এ দেশ! যারা মনে করে, বাঁশিতে ফু দিল আর দেশে স্বাধীন হয়ে গেল। এদের আসলে ভূগোল ও ইতিহাসের জ্ঞান আছে কিনা সন্দেহ আছে। একটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। একটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল জাতির পিতার নেতৃত্বে। এ বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল- কীভাবে দেশটা সাজাবেন, প্রতিটি মানুষের জীবনমান উন্নত করবেন, এ জন্য তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।’
তিনি বলেন, এতদিন আমাদের অর্থ ছিল, আমরা ভর্তুকি দিয়েছি। কিন্তু করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও স্যাংশনের ফলে বিশ্বব্যাপী যে মন্দা দেখা দিয়েছে তাতে আমরাও আক্রান্ত। সুতরাং এতদিন বিদ্যুৎ এবং গ্যাসে যে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে সেই ভর্তুক্তির টাকা এখন আপনাদের দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা কখনোই চায়নি এ দেশ স্বাধীন হোক। আর সেজন্যই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে যাতে স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়ে। ধারাবাহিকতায় বারবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দেয়া হয়েছে। কখনো ভোট কারচুপি করে, কখনো চক্রান্ত করে। সেনাবাহিনীতে কিছু বেঈমান-মোনাফেক ছিল, যারা আমাদের বাসায় আসা-যাওয়া করত। আমার মায়ের হাতে কত খাবার খেয়েছে, বাবা তাদের সন্তানের মত ভালোবাসতেন! সেই তারাই তাকে হত্যা করল। কিন্তু তারপর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা এদেশকে কী দিয়েছে? পঁচাত্তরের পর এদেশের মানুষ শোষণের শিকার হয়েছে। ২১ বছর এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত এদেশের মানুষ কী পেয়েছে? শোষণ, বঞ্চনা আর নিদারুণ কষ্ট। অথচ বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন। একটা উন্নত রাষ্ট্রের ভিত তৈরি করেছিলেন।’
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.