যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এই সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটছে, জ্বালানি ঘাটতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ কঠিন হয়ে পড়ছে। এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সকল পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানাই।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) কাজাখস্তানের আস্তানায় অনুষ্ঠিত ইন্টারঅ্যাকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন এশিয়ার (সিকা) ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

শীর্ষ সম্মেলনে ২৭ সিকা সদস্য দেশের নেতৃবৃন্দ, যার মধ্যে ১২ জন রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান এবং দুজন উপরাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি পূরণের নীতির আলোকে জলবায়ু অর্থায়নের অঙ্গীকার অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের ওপর গুরত্ব আরোপ করেন। আগামী মাসে মিসরের শার্ম-আল-শেখ-এ অনুষ্ঠেয় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের পূর্বে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে তিনি এই আহ্বান জানান।

ড. মোমেন তার বক্তব্যে শান্তির সংস্কৃতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে নিরস্ত্রীকরণের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান পুনরায় তুলে ধরেন।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগ ও উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সরকার ‘হোল-অব-গভর্নমেন্ট’ এবং ‘হোল-অব-সোসাইটি’ ধারণার ভিত্তিতে অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে ড. মোমেন সিকা নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সিকা নেতাদের সমর্থন কামনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের দ্রুততম সময়ে মধ্যে নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ স্বদেশ প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে।

সম্মেলনে সিকা তহবিল, তথ্য-প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার এবং জাতিসংঘ গৃহীত সন্ত্রাসবাদবিরোধী কৌশল (ইউএনজিসিটিএস) বাস্তবায়নে আস্থা বৃদ্ধিমূলক কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়। এ ছাড়া ‘আস্তানা স্টেটমেন্ট অব  ট্রান্সফরমেশন’ শীর্ষক ঘোষণায় সিকাকে ফোরাম থেকে এশিয়া অঞ্চলের একটি আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক সংগঠনে উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে নেতৃবৃন্দ ঐকমত্য পোষণ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল লতিফ বিন রাশিদ আল-যায়ানি, কাজাখস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুখতার তেলেউবারদি এবং কিরগিজস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুলুবায়েভ যিনবেক মলডোকানোভিচের সাথে পৃথক পৃথক বৈঠকে মিলিত হবেন।

অর্থসূচক/এএম/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.