তামাকে বছরে কর ফাঁকি হতে পারে ১২ হাজার কোটি টাকা

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের উত্থাপিত বাজেটে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তামাকপণ্যের ওপর কর প্রস্তাব অপরিবর্তিত থাকলে সিগারেট কোম্পানিগুলোর বিক্রিই বাড়বে না, কর ফাঁকির সুযোগও বাড়বে। এতে সিগারেট কোম্পানিগুলো বছরজুড়ে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দিতে পারে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকপণ্যে কর পর্যালোচনায় এ তথ্য তুলে ধরেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয়ের বক্তারা।

সেমিনারে এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে উন্নয়ন সমন্বয় ডিরেক্টর (গবেষণা) আবদুল্লাহ নাদভী বলেন, আসন্ন অর্থবছরের জন্য ন্যূনতম ঘোষিত খুচরো মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি হচ্ছে বাজারে। বেশি দামে সিগারেট বিক্রি হলেও কম দেওয়া হচ্ছে নির্ধারিত দামের ভিত্তিতেই। গত বছরের হিসাবের তুলনায় আগামী অর্থবছরে ৭ হাজার ৩৬১ কোটি টাকার সিগারেট বেশি বিক্রি হবে। এতে সিগারেট কোম্পানিগুলোর আনুমানিক ১২ হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকির সুযোগ তৈরি হবে।

আসন্ন অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের আগেই তামাকপণ্যে কর বাড়ানোর সুপারিশ করেন তিনি।

এ সময় ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আকতার বলেন, আর মাত্র নয়দিন পর জাতীয় সংসদে বাজেট পাস হবে। এর মধ্যে কিছু করা যায় কি না সেটা আমাদের ভাবা দরকার। ১০০ জন সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন, তামাকের বিরুদ্ধে একটা প্রস্তাব দেবেন। একইসঙ্গে এনবিআরকেও বলতে হবে বাজেটের কর প্রস্তাব অপরিবর্তিত থাকলে সিগারেট কোম্পানিগুলোর বিক্রিই বাড়বে না, কর ফাঁকির সুযোগও বাড়বে। গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়গুলোকে বিবেচনায় আনতে হবে।

রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, তামাকের ওপর শুধু কর আরোপ করলে হবে না, সচেতনতাও তৈরি করতে হবে। হাসপাতালের ভেতরেও ধূমপান চলে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আঙিনায় অবাধে সিগারেট বিক্রি হয়। এসব জায়গা ধূমপানমুক্ত করতে হবে।

মাগুরা-১ আসনের এমপি মো. সাইফুজ্জামান বলেন, সংসদে অনেকে তামাকবিরোধী বক্তব্য রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীও তামাকের বিরুদ্ধে নির্দেশনা আগেই দিয়েছেন। তামাকের ব্যবহার কমছে দেশে। আমার এলাকায় একসময় অনেক তামাক চাষ হতো। এখন প্রায় হয় না বললেই চলে। আমি নিজে এলাকায় গিয়ে এসব পর্যবেক্ষণ করছি।

তিনি বলেন, তামাক চাষ সহজ, কোনো পোকা লাগে না। এজন্য কৃষকরা এ পণ্যটি চাষে উৎসাহিত হয়। আমাদের উচিত নিজ নিজ এলাকায় তামাক চাষের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নেওয়া। তামাকপণ্যে কর বাড়ানো যায় কি না, বাজেট বাস্তবায়নের আগেই এ বিষয়টি আমরা অর্থমন্ত্রীর নজরে আনতে পারি।

নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আফতাব উদ্দিন সরকার বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার তামাক চাষিদের সঙ্গে আমি বহুবার বসেছি, কথা বলেছি। তামাক চাষের ক্ষতিকর দিকগুলো তাদের বোঝাতে পেরেছি। এখন সেখানে তামাক চাষ অনেক কমেছে।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ উন্নয়ন সমন্বয় ও তামাক নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

অর্থসূচক/এমআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.