বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন নির্বাচনে আসুন, ক্ষমতা নিন, সরকার পরিচালনা করুন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় বাজেট নিয়ে সিপিডি আয়োজিত এক সংলাপে পরিকল্পনা মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সংলাপের বিশেষ অতিথি হিসেবে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি অনির্বাচিত সরকারের বাজেট নিয়ে প্রশ্ন তোলার অনেক অবকাশ আছে।
তিনি বলেন, এই সরকার ঠিক কোন ধরনের অর্থনৈতিক মডেল অনুসরণ করছে, সেটা তার কাছে বোধগম্য নয়। যারা উন্নয়নে কোন ভূমিকা পালন করছে না দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার করছে তাদের সেই টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত অনৈতিক। যারা দেশে থাকছেন বিনিয়োগ করছেন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছেন তারা ২৫% আয়কর দিবেন আর যারা দেশে বিনিয়োগ না করে বিদেশে টাকা পাচার করছেন তাদের ৭% কর দিয়ে সেই টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া তার অভিযোগ সরকার পরিসংখ্যান নিয়ে কারসাজি করছে।
বিশ্বব্যাংকের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, ২০০৭ সালে বিএনপি সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল তখন দেশের পরিসংখ্যান নিয়ে স্কোর ছিল ৭০, এখন যা তার প্রায় অর্ধেকে থেকে নেমে এসেছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী যে অনির্বাচিত শব্দটি বললেন তা ক্লিশে হয়ে গেছে। মানে এই কথা শুনতে শুনতে জনগণের কান ঝালাপালা হওয়ার অবস্থা। তিনি আরো বলেন, এই সরকার অনির্বাচিত নয়, কার্যকর সরকার।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ব্যবহৃত কারসাজি শব্দটি নিয়ে প্রবল আপত্তি করেন। তিনি বলেন, তার মতো একজন জ্যেষ্ঠ নেতার কাছ থেকে এমন ভাষা আশা করা যায় না। তিনি আরো বলেন, সরকার নিশ্চয়ই কারসাজি করে পদ্মা সেতু বানাতে পারেনি, মেট্রোরেল বানাতে পারেনি, নদীর নিচ দিয়ে টানেল তৈরি করতে পারিনি। দেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে সেই পরিসংখ্যান নিশ্চয়ই কারসাজি করে তৈরি করা যায় না বা মানুষের গড় আয়ু ৭৫ বছর, তা নিশ্চয়ই কারসাজি করে বানানো হয়নি।
বিএনপিকে নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি যতদিন এই আলোচনা করবে, ততদিন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী স্বীকার করেন, দেশে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। অনেকে সরকারের মূল্যস্ফীতি পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তিনি তা স্বীকার না করে বলেন বিবিএস অনেক বড় পরিসরে মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান তৈরি করে। সবখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তারা। তবে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আলাদা সূচক করার প্রয়োজনীয়তা আছে। এতে বোঝা যাবে, তাদের ওপর মূল্যস্ফীতির প্রভাব ঠিক কতটা।
সংলাপে সিপিডির পক্ষ থেকে উপস্থাপনা পেশ করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় পার্টি নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ সংশ্লিষ্টরা।
অর্থসূচক/এমএস/এমএস



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.