এসএমই বোর্ডের কোম্পানির করহার অর্ধেক করার দাবি

পুঁজিবাজারে এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করের হার কমানোর দবি করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এক্সচেঞ্জটির চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রথম ৫ বছর পর্যন্ত এই কর ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন।

বর্তমানে এসএমই বোর্ডের কোম্পানিগুলোকেও মূল বোর্ডের কোম্পানিগুলোর সমান হারে কর দিতে হয়। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এই কর ২০ শতাংশ নির্ধরণের কথা বলা হয়েছে।

আজ সোমবার (১৩ জুন) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মিডিয়া সেন্টারে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, প্রায় এক বছর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এসএমই বোর্ড নামে একটি পৃথক বোর্ড চালু করে। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করে দীর্ঘমেয়াদী মূলধন যোগান ও কর্পোরেট গভর্ন্যান্স উন্নত করা। এই বোর্ডে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে লেনদেনে আগ্রহী করে তুলতে নূন্যতম ৫ বছরের জন্য হ্রাসকৃত ১০ শতাংশ হারে কর ধার্য্য করার দাবি জানাচ্ছি।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে দেখে এসেছি যে এসএমই বোর্ডের মতো নতুন উদ্যোগগুলোকে সরকার প্রাথমিক অবস্থায় অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। বাজেটের পূর্বে এসএমই বোর্ডের জন্য সরকারের কাছে কিছু সুযোগ-সুবিধা চেয়েছিলাম আমরা। যার মাঝে পাঁচ বছরের জন্য ১০ শতাংশ হারে কর দেওয়ার সুযোগ করে দেয়ার বিষয়টিও রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা তাই আবারও সরকারকে জানাতে চাচ্ছি, এসএমই বোর্ডে যে প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাভুক্ত হবে তাদেরকে পুঁজিবাজারে লেনদেনে আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রীয় হারে কর দেওয়ার সুযোগ করে দেয়া দরকার।

উল্লেখ্য, গত ৯ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন। জাতীয় সংসদে এটি নিয়ে আলোচনার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে এটি পাশ হলে তা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

অন্যদিকে, ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করা ডিএসইর এসএমই বোর্ডে বর্তমানে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৩ টি। মূলত স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করে দীর্ঘমেয়াদী মূলধন যোগান ও কর্পোরেট গভর্ন্যান্স উন্নতরণের লক্ষ্যে পুঁজিবাজারের এসএমই বোর্ডের যাত্রা শুরু হয়। তবে যাত্রা শুরুর প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও এসএমই বোর্ডের নেই কোনো উল্লেখযোগ্য সাফল্য।

তবে পাঁচ বছরের জন্য ১০ শতাংশ কর হ্রাসের এই উদ্যোগ এসএমই মার্কেটের লেনদেনকে চাঙ্গা করে তুলবে বলে মনে করছেন ডিএসই চেয়ারম্যান।

অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশের জিডিপি ও কর্মসংস্থানে এসএমই খাতের অবদান বৃহৎ শিল্পের চেয়েও বেশি। কিন্তু এসব প্রতষ্ঠানের বড় অংশই অর্থায়ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সেখানে অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ কোম্পানি এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে না। এই বাস্তবতায় তাদের অর্থায়ন সমস্যা দূর করে এসএমই খােত গিত সঞ্চারের লক্ষ্যেস্টক এক্সচেঞ্জে এসব কোম্পানির জন্য এসএমই বোর্ড নামে আলাদা বোর্ড চালু করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের আশা, এসএমই বোর্ডের মাধ্যমে মূলধন পেলে তালিকাভুক্ত এসব কোম্পানি একসময় বড় কোম্পানিতে উন্নীত হবে। অন্যদিকে এসএমই বোর্ডে থেকে কমপ্লায়েন্স বা আইন পরিপালনের চর্চা করে তাদের গভর্ন্যান্সের মান উন্নত করতে পারবে। এক পর্যায়ে এসব কোম্পানি সহজেই এসএমই বোর্ড থেকে মূল বোর্ডে স্থানান্তরিত হতে পারবে। তাতে মূল বোর্ডে ভাল ও পরীক্ষিত কোম্পানির সংখ্যা বাড়বে, যা পুঁজিবাজারকে বড় হতে অনেক সহায়তা করবে।

অর্থসূচক/এমআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.