সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একের পর এক আসছে লাশবাহী এম্বুলেন্স। এদিকে স্বজনহারাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে চমেক হাসপাতালের আশপাশের পরিবেশ। হাসপাতালের বেডে কাতরাছেন আহতরা।
রোববার (৫ জুন) বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৩৩ জনের মরদেহ চমেক হাসপাতালের মর্গে আনা হয়। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৫ জন কর্মীও রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজনকে শনাক্ত করা গেছে। তারা হলেন- কুমিরা ফায়ার স্টেশনের নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কর্মরত বাঁশাখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামের মনিরুজ্জামান (৩২), একই উপজেলার চারিয়ার নাপুরা এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে মো. মহিউদ্দীন (২৪), ভোলা জেলার হাবিবুর রহমান (২৬) ও রবিউল আলম (১৯)। তাদের মধ্যে মহিউদ্দীন বেসরকারি পার্ক ভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৩৩ জনের লাশ এসেছে। লাশগুলো হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। সকাল ৯টার পর যে লাশগুলো আনা হয়েছে, সেগুলো চেনার উপায় নেই। পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ টেস্ট করা লাগতে পারে।’
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন, আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২১ জন। আহতরা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। কয়েকজন কর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ওদিকে শনিবার রাত ১০টায় লাগা আগুন দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। জ্বলছে একের এক কন্টেইনার। আগুন নিয়ন্ত্রণে ডাকা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। ফায়ার সার্ভিস ও র্যাব পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা যোগ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, শনিবার রাত ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পরই ডিপোতে থাকা আমদানি ও রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনারে আগুন ধরে যায়। এই বিস্ফোরণে শব্দে আশেপাশের চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে উঠে। আশপাশের অধিকাংশ বিল্ডিয়ের কাঁচের গ্লাস ভেঙে যায়। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সবগুলো ইউনিট চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে অগ্নি নির্বাচক গাড়ি পাঠাতে অনুরোধ করা হয়। যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.