পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতি (Reserve) স্বস্তিদায়ক অবস্থানে আছে। বর্তমানে আমদানি একটু বেশি বেড়ে যাওয়ায় তা চাপে থাকলেও আগামীতে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে সে চাপ কমে আসবে। এ বিষয়ে সরকার বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
তিনি বলেছেন, আমাদের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণও তেমন বেশি নয়। গত মার্চ মাসের হিসাব অনুসারে, এই ঋণের পরিমাণ মোট রপ্তানি আয়ের ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। ঋণের কিস্তি পরিশোধে ছাড়কৃত সময় (Grace Period) শেষ হয়ে আসতে থাকায় আগামীতে হয়তো ঋণ পরিশোধের হার কিছুটা বাড়বে। তবে তা কোনোভাবেই চিন্তার কারণ হবে না।
আজ রোববার (২৯ মে) বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) আয়োজিত বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রক্ষাপটে বাংলাদেশ শীর্ষক একক বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম। এতে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ সূচনা বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী।
ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমদ তার বক্তৃতায় বলেন, শ্রীলংকার অবস্থার সাথে বাংলাদেশের তুলনা একেবারেই অবান্তর বিষয়।
অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বলেন এই করোনার মধ্যেও প্রায় ৮ লাখ শ্রমিক বিদেশে গেছেন। যারা দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে।
তিনি বলেন করোনার মধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যখন দেশে যখন অর্থনীতি’র সকল ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ তখন আমাদের দেশে জীবন ও জীবিকা সমানভাবে চলেছে। করোনার পর থেকে রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন সরাসরি জাহাজে পণ্য পাঠানো হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে।
এ সময় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ হচ্ছে এখন লেস দেন ২ মিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানের হচ্ছে ১০ বিলিয়ন ডলার আর বাংলাদেশের হচ্ছে ৪২ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের ১০ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১০ সালে আমাদের ছিল। আমরা পাকিস্তানের দিকে যাচ্ছি না, আমারা সামনের দিকে আসছি। এটা আমাদের ভাবতে হবে। আমরা কিভাবে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের সাথে নিজেদের কল্পনা করি। সেগুলোর সাথে আমরা নিজেদের জড়ানোর চেষ্টা করি। এই মনমানসিকতাকে আমাদের বেধে রাখতে হবে। যদি আমরা সেখান থেকে না বেরিয়ে আসি, আমাদের যোগ্যতার প্রতি যদি আমাদের আস্থা না থাকে, তাহলে কিন্তু আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। কাজেই সব ধরণের গুজব বা অপব্যাখ্যা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে।
শেখ শামসুদ্দিন আরও বলেন, আমাদের চিন্তা করতে হবে এদেশের উন্নয়নে কিভাবে আমরা সবাই মিলে সংযুক্ত থাকতে পারি। মনে রাখতে হবে যতদিন এদেশে কৃষকরা আছেন, যতদিন এদেশের শিল্পায়ন আছে এবং যতদিন বিদেশে আমাদের প্রবাসীরা আছেন, ততদিন এদেশের কোনো কিছুর অভাব হবে না। তাই আমরা আশা করি গুজবতান্ত্রিক কোনো কিছু বা কোনো ধরণের অপব্যাখ্যার মুখোমুখি আমরা যেন না হই।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.