পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারহাউজের দেওয়া ঋণের (মার্জিন ঋণ) অনুপাত বাড়তে পারে। বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। আজই এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি হতে পারে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুসারে, মার্জিন ঋণের (Margin Loan) ঋণের অনুপাত (Loan Ratio) বাড়িয়ে ১:১ করা হতে পারে। অর্থাৎ গ্রাহকের নিজস্ব মূলধন ১০০ টাকা থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তাকে আরও ১০০ টাকা ঋণ দিতে পারবে। তবে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব এখতিয়ার।
বর্তমান ঋণ-অনুপাত অনুসারে, একটি প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকের ১০০ টাকা মূলধনের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা ঋণ দিতে পারে।
মার্জিন ঋণের অনুপাত বাড়ানো হলে দু’ভাবে লাভবান হতে পারে বাজার। প্রথমত: এতে বিনিয়োগকারীর ক্রয়-ক্ষমতা বাড়বে। বর্তমান মূলধনের সাথে ঋণ যোগ করে বাড়তি শেয়ার কিনতে পারবেন। এতে বাজারে সাময়িকভাবে শেয়ারের চাহিদা কিছুটা বাড়তে পারে।
অন্যদিকে ঋণের অনুপাত বাড়লে বাজার এই মুহূর্তে চলমান ফোর্সড সেলের (Forced Sale) চাপ কমতে পারে। বিধি অনুসারে, মার্জিন একাউন্টে ডেবিট ব্যাল্যান্স একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নেমে এলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রাহককে বাড়তি মার্জিন বা টাকা জমা করে সমন্বয়ের নোটিস দেন। গ্রাহক সেটি করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারহাউজ গ্রাহকের একাউন্ট থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শেয়ার বিক্রি করে ঘাটতি সমন্বয় করে নেয়। এটি আইনী বাধ্যবাধকতা। মার্ক টু মার্কেট ভিত্তিতে এটি করা হয়। দর পতনের কারণে আজ যাদের ডেবিট ব্যালান্স ফোর্সড সেলের আওতায় চলে এসেছে ঋণের অনুপাত বাড়লে তাদের একাউন্টে ফোর্সড সেল করতে হবে না। তাতে সাময়িকভাবে বিক্রির চাপ কমবে বাজারে।
তবে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ঋণের অনুপাত বাড়ালেও ঢালাওভাবে সব গ্রাহককে বাড়তি ঋণ দেওয়া উচিত হবে না। গ্রাহকের অভিজ্ঞতা, বিনিয়োগের পরিমাণ এবং সক্ষমতা বিবেচনা করে ঋণ দেওয়া ভাল হবে। নইলে বাড়তি ঋণ পেয়ে না বুঝে শেয়ার কিনলে এবং কোনো কারণে বাজারে আরও দর পতন হলে তারা ঋণ সমন্বয় করতে পারবেন না। তাতে একদিকে বিনিয়োগকারী আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং নিজের ব্যর্থতার জণ্য পুঁজিবাজারকে দোষারূপ করবেন। অন্যদিকে ঋণ সীমা বাড়ানোর পরও বাজারে দরপতন হলে ফোর্সড সেলের বাড়তি চাপ তৈরি হবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.