রমজানেই কাবুলে বোমা ফাটাল আইএস, নিহত কমপক্ষে ১৬

দু’দিন পার না হতেই আবারও বোমা বিস্ফোরণ কেঁপেছে আফগানিস্তানের মাটি। দেশটির রাজধানী কাবুলের উত্তরাঞ্চলে দুটি পৃথক বোমা বিস্ফোরনে কমপক্ষে ১৬ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এদের মধ্যে কমপক্ষে ৩২ জনের অবস্থা আশংকাজনক। বোমা হামলার ঘটনা দুটির একটি ঘটেছে কুন্দজ শহরে, অপরটি মাজার-ই-শরিফে।

মাঝার-ই শরীফ শহরের একজন সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীর বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২১এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ খবর জানিয়েছে। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, জঙ্গী সংগঠন আইএস মসজিদে হামলার দায় স্বীকার করে টেলিগ্রামে এক বিবৃতি দিয়েছে।

শিয়া মসজিদে হামলার বিষয়ে মাঝার-ই-শরিফ শহরের তালেবান কমান্ডারের মুখপাত্র মোহাম্মদ আসিফ বোমা বিস্ফোরনের সত্যতা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন।
মাজার-ই-শরিফ শহরের এক বাসিন্দা (মহিলা) জানিয়েছেন, তিনি তার বোনকে সাথে নিয়ে পাশের একটি মার্কেটে যাচ্ছিলেন। সেসময় তিনি এক ভারী বোমা বিস্ফোরনের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন। তিনি দেখতে পেয়েছিলেন যে মসজিদটির চারপাশ থেকে ধোঁয়া আসছিল। মার্কেটির গ্লাসগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। তখন স্থানটি লোকজনে ভর্তি ছিল এবং তারা পালাতে শুরু করল।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সে স্বাস্থ্যকর্মী আহমেদ ঝিয়া ঝিনদানি এএফপিকে জানিয়েছেন, চারিদিকে রক্ত আর আতংক।লোকজন চিৎকার করতেছিল। দুঃসংবাদ পেয়ে নিহত ও আহতজনের স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে আসছিলেন।তাদের অনেকেই রক্তদানেও এগিয়ে আসছিল।
জানা গেছে, আফিগানিস্তানে রয়েছে ৩৮ মিলিয়ন লোকের বসবাস। তাদের ১০ থেকে ২০ শতাংশ-ই হল শিয়া গোষ্ঠী। আইএস তাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্মবিরোধী মনে করে তাদের উপর হামলা করছে।

শিয়া কমিউনিটি আফগানিস্তানের একটি সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠী। এ গোষ্ঠীটি বরাবরই আইএসের শিকারে পড়ছে।গত বছর আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানদের হাতে চলে যাওয়ার পর থেকেই দেশটিতে বোমা হামলার সংখ্যাটা কমে এসেছিল। কিন্তু এ বছর মুসলিমদের পবিত্র মাহে রমজান মাসেই পর পর বোমা ফাটানো হয়েছে বলে রয়টার্স ও এনডিটিভি সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে গত মঙ্গলবারও (১৯ এপ্রিল) কাবুলের কাছে বোমা বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটে। সেদিন দাশত-ই-বারচি এলাকায় বালকদের এক বিদ্যালয়ের বাহিরে দুটি বিস্ফোরন ঘটে যেখানে ১১ জন আহত ও ৬ জন মারা যায়।

এদিকে আফগানিস্তানের তালেবান শাসকেরা জানিয়েছেন, গত বছর আগস্ট থেকে তারা দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখানের পরিবেশ শান্ত রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অফিসিয়াল ও বিশ্লেষক সূত্রে জানা গেছে যে, সেখানে এক বিদ্রোহের ঝুঁকি রয়েছে।
গত বছর মে মাসে দাশাত-এ-বারচি স্কুলের নিকটে তিন-তিনটি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৮৫ জন মেয়ে শিক্ষার্থী মারা যায় এবং এতে ৩শ জন আহত হয়।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.