বিড়ি শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রকৃত লাভবান মালিকরাই

প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার সময় আসলেই বিড়ি জাতীয় পন্যের উপর করবৃদ্ধি ঠেকাতে শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। এমনকি বাজেট পাস হওয়ার পরও তারা একই দাবিতে আন্দোলন চালায়। বিড়ি শ্রমিকদের এই আন্দোলন সাজানো । এধরনের সংঘবদ্ধ আন্দোলন অন্য কোনো শিল্পের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। ।মূলত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিড়ি শ্রমিকদের ঢাকায় নিয়ে আসে বিড়ি কম্পানির মালিকরা । বিড়ি শ্রমিকদের এই আন্দোলনের প্রকৃত লাভবান হয় বিড়ি মালিকরা। গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) পরিচালিত বাংলাদেশে বিড়ি শ্রমিক আন্দলনের কারন অনুসন্ধান : একটি গুনগত বিশ্লেষণ ‘ শীর্ষক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে ।

আজ শনিবার (১২ মার্চ) সিরডাপ মিলনায়তনে প্রজ্ঞা এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্সের (আত্মা) উদ্যোগে  যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনের ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে আলোচকেরা গনমাধ্যমের সামনে এসব প্রতিবেদন তুলে ধরেন। ।

তাদের এই গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, বিড়ি শ্রমিকদের এই আন্দোলনের পুরো দ্বায়িত্ব থাকে মালিক পক্ষের কিছু লোক এবং বিড়ি কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার  ও এজেন্ট দের উপর । ২০১৯ সালে বিড়ি শ্রমিকদের আন্দলনের ফলে বিড়ির উপর বর্ধিত কর প্রত্যাহার করে নেয় জাতিয় রাজস্ব বোর্ড এতে এক হাজার শলকা বিড়িতে মালিকদের আয় বৃদ্ধি পায় ২৮ টাকা অথচ শ্রমিকদের মজুরি বাড়ে মাত্র ৬ টাকা । ২০১৮ -২০২০  তিন বছরে প্রতি হাজার শলাকায় মালিকদের মুনফা বেড়েছে ১১৮.৮ টাকা ।

গবেষণায় দরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে বিড়ির ব্যাবহার নিরুৎসাহিত করতে বিড়ির ওপর উচ্চহারে করারোপ করা বর্ধিত কর থেকে  আহরিত রাজস্ব বিড়ি শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যায় করা  কর আইন ও শ্রম আইন বিশেষত শিশুশ্রম ব্যবহার সংক্রান্ত আইন প্রতিপালনের বিড়ি শিল্পকে কঠোর মনিটরিংয়ের আওতায় আনার সুপারিশ জানায় ।

এসময় অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ এবং জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমদ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে বিড়ি শিল্পের নিবিড়তা, শ্রমিক আন্দোলন সংগঠনের প্রবণতা এবং তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে লালমনিরহাট, রংপুর, পাবনা এবং কুষ্টিয়া জেলায় ২০২১ সালে গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, গবেষণার ফলাফলে আমি একমত। এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ খাত। সরকারের উচিত হবে এই শিল্পকে নিরুৎসাহিত করা।

সভাপতির বক্তব্যে সিটিএফকে, বাংলাদেশ-এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শ্রমিক শোষণের বড় উদাহরণ হচ্ছে বিড়ি শিল্প। সাজানো আন্দোলনে প্রকৃত লাভবান হয় মালিক পক্ষই।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.