রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে ‘সেনা অভিযান’ পরিচালনার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে কিছু কিছু বিস্ফোরণের সংবাদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দেশটির রাজধানী কিয়েভ সহ দনেৎস্ক অঞ্চলের ক্রামাতর্সকে বিস্ফোরণের খবর সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খারকিভ, দক্ষিণের ওদেসা এবং পূর্বাঞ্চলের দনেৎস্ক ওবলাস্ত এলাকায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। খবর বিবিসির
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নিশ্চিত করেছেন যে ইউক্রেনে মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে। তিন দাবি করেছেন ইউক্রেনের স্থাপনা ও সীমান্ত রক্ষীদের ওপর মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
বিবিসি’র কিয়েভ সংবাদদাতা জেমস ওয়াটারহাউজ জানিয়েছেন ইউক্রেনের একজন সরকারি কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত হওয়া রুশ সেনা অভিযান সম্পর্কে তাদের ধারণা দিয়েছেন। ঐ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আজ সকালে কিয়েভে ক্রুজ মিসাইল আক্রমণ করা হয়েছে। দেশটির দক্ষিণে ওদেসা অঞ্চলে সেনা সদস্যদের আগ্রাসনের খবরও পাওয়া গেছে। রুশ সীমান্তের প্রায় ২৫ মাইল দূরের খারকিভ অঞ্চলেও সেনা সদস্যরা এগিয়ে আসছে, বলছেন এই সরকারি কর্মকর্তারা।
বিবিসি সংবাদদাতা জেমস ওয়াটারহাউজের খবর অনুযায়ী, প্রত্যক্ষদর্শী ও সরকারি কর্মকর্তারা মনে করছেন যে যথেষ্ট বড় পরিসরে এই সেনা অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, কিয়েভে দেশটির সেনাবাহিনী হেডকোয়ার্টারে এবং মিসাইল কমান্ড সেন্টারে মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টোলেনবার্গ ইউক্রেনে রাশিয়ার বেপরোয়া হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এক টুইটে ন্যাটো মহাসচিব বলেন, হামলার কারণে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও ইউরো-আটলান্টিক অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তিনি আরও বলেন, ন্যাটোর মিত্রদেশগুলো রাশিয়ার নতুন হামলা নিয়ে আলোচনায় বসবে।
ইউক্রেনের শহরে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, তারা দেশটির সেনা স্থাপনা, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও বিমান বাহিনীর ওপর ‘হাই প্রেসিশন ওয়েপন’ বা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে – রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আরআইএ দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন যে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে কথা বলেছেন। বাইডেন বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের অসৎ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বনেতাদের প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানানোর জন্য এবং ইউক্রেনের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জেলেনস্কি আমাকে অনুরোধ করেছে।
বাইডেন জানিয়েছেন যে তিনি বৃহস্পতিবার জি-সেভেন দেশগুলোর নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা ‘রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।’ এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক বিবৃতিতে ‘প্ররোচণা ছাড়া ও অন্যায্য’ এই আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছিলেন।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.