ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা আরও ছয় মাস বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। চিঠিতে যত দ্রুত সম্ভব ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধার মেয়াদ বৃদ্ধিসংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়ারও আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
আজ রোববার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে এফবিসিসিআইয়ের ২০১৯-২০ বছরের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) সংগঠনটির সভাপতি জসিম উদ্দিন এ তথ্য জানান।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা এখনও ভয়াবহ অবস্থা পার করছেন। এ পরিস্থিতিতে ঋণ শ্রেণীকরণের মেয়াদ বাড়ালে ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি আসবে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দ্রুত সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যে ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা আগামী বছরের জুলাই পর্যন্ত বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়েছে।
এজিএমে সভাপতির বক্তব্যে জসিম উদ্দিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি তাড়াহুড়া করে নতুন আয়কর আইন চূড়ান্ত না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমানে একটি আয়কর আইন প্রযোজ্য রয়েছে, তাই এফবিসিসিআইসহ সব সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন আইন প্রণয়ন করা উচিত।
এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বাংলাদেশকে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও উন্নয়নশীল দেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দেশের সব খাতের ব্যবসায়ীদের একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন জসিম।
তিনি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় কমিটি এবং এর অধীন বিভিন্ন উপকমিটির সভায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে এফবিসিসিআই। এ ছাড়া ২০২৬ পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পলিসি অ্যাডভোকেসির অংশ হিসেবে ‘ইন্টারনাল রিসোর্স মোবিলাইজেশন অ্যান্ড ট্যারিফ র্যাশনালাইজেশন’, ‘গ্লোবাল মার্কেট এক্সেস ২০২১-২০২৬ অ্যান্ড বিয়ন্ড’, ‘ইনভেস্টমেন্ট মেজারস ফর সাসটেইনেবল ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট’ ও ‘সাসটেইনেবল এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট, সাবসিডিস অ্যান্ড ইনসেনটিভস’ শীর্ষক চারটি কর্মকৌশল হ্যান্ডবুক আকারে প্রণয়ন করা হয়েছে, যা শিগগিরই সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে। একই সঙ্গে খাতভিত্তিক সক্ষমতা বাড়াতে এফবিসিসিআইতে ইনোভেশন সেন্টার স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে নানা উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কোভিডকালিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশব্যাপী স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সামগ্রি বিতরণ করেছে এফবিসিসিআই। এছাড়াও, বিজয়ের সূবর্ণ জয়ন্তীকে স্বরণীয় করতে এফবিসিসিআই আয়োজন করেছে ১৬ দিনব্যাপী ‘বিজয়ের ৫০ বছর: লাল-সবুজের মহোৎসব।’
এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনে ৫০ জন ব্যবসায়ী মুক্তিযোদ্ধাকে সংবধর্না দেবে এফবিসিসিআই।
করোনা সংক্রমণজনিত কারণে ২০১৯-২০ সময়ের এজিএম নির্ধারিত সময়ে করা সম্ভব হয়নি। সেই সভাটিই গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এজিএমে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, আমিনুল হক শামীম, আমিন হেলালী, সালাহউদ্দীন আলমগীর, হাবীব উল্লাহ ডন, এম এ রাজ্জাক খান রাজসহ পরিচালকরা।
অর্থসূচক/এমএস/এমএস



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.