মাঝে কিছুদিন সংক্রমণ কমলেও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পর দেশে করোনা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। নতুন রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু—দুটিই বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
এছাড়া আরও ১৫টি জেলা আছে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে। সংক্রমণের মধ্যম ঝুঁকিতে আছে ৮টি জেলা। এক সপ্তাহের নমুনা পরীক্ষা ও রোগী শনাক্তের হার বিবেচনা করে এই ঝুঁকি চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, খুলনা বিভাগের দশটি জেলার সব কটিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মধ্যে ছয়টি অতি উচ্চ ঝুঁকিতে, দুটি আছে উচ্চ ঝুঁকিতে।
ঢাকা বিভাগের মধ্যে সাতটি জেলা আছে অতি উচ্চ ঝুঁকিতে। রাজধানীসহ দুটি জেলা আছে উচ্চ ঝুঁকিতে আর চারটি জেলা আছে মধ্যম ঝুঁকিতে। রংপুর বিভাগের পাঁচটি অতি উচ্চ এবং তিনটি জেলা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামসহ ছয়টি জেলা অতি উচ্চ, তিনটি জেলা উচ্চ এবং একটি জেলা মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ। বরিশাল বিভাগে তিনটি জেলা অতি উচ্চ ঝুঁকিতে এবং মধ্যম ঝুঁকিতে তিনটি জেলা। সংক্রমণ এখনো তুলনামূলক কম সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে।
কয়েকটি জেলায় লকডাউন দেওয়া হলেও উত্তর ও দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না; বরং তা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এখন পরিস্থিতির বেশি অবনতি হয়েছে খুলনা বিভাগে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৮৫ জনের মধ্যে ৩৬ জনই ছিলেন এই বিভাগের।
এই বিভাগের খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, মেহেরপুরে রোগী বাড়ছে দ্রুত। রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, পাবনা, বগুড়ায়ও রোগী বাড়ছে।
এদিকে রাজধানী ঢাকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সূচকে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকায় লকডাউন হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অন্যতম মুখপাত্র রোবেদ আমিন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে, আশপাশের মানুষজনকে ঠেকিয়ে রাখতে না পারলে ঢাকার পরিস্থিতি নাজুক হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে লকডাউনের প্রয়োজন হতে পারে।
স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ না মানলে চলমান করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক পর্যায়ে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। চলতি বছরের মার্চ থেকে দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এখনো কিছু বিধিনিষেধ জারি আছে। লকডাউনের প্রভাবে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে সংক্রমণ কমতে শুরু করেছিল। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর সংক্রমণে আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি হয়। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে দ্রুত সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। সপ্তাহখানেক ধরে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
অর্থসূচক/কেএসআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.