আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধিতে বিসিএমএ’র উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রতি সিমেন্টের কাঁচামালের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন (বিসিএমএ)।

বাংলাদেশে সিমেন্ট তৈরির যে কয়েকটি মূল কাঁচামাল রয়েছে তার সবগুলোই আমদানি নির্ভর এবং এরমধ্যে ক্লিংকার অন্যতম। প্রতি টন ক্লিংকার আমদানি করতে আগে যেখানে ৪২ মার্কিন ডলার খরচ হতো, এখন সেখানে লাগছে ৪৬ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ প্রতি টন ক্লিংকার আমদানিতে চার মার্কিন ডলার খরচ বেড়েছে। মূল্য বৃদ্ধির এই ধারা এখনো অব্যাহত আছে।

এ চার মার্কিন ডলারের মধ্যে দুই মার্কিন ডলার বেড়েছে ক্লিংকারের এফওবি (freight on board or FOB) অর্থাৎ উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে। আর বাকি দুই মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে জাহাজ ভাড়ায় (cost & freight or CFR)।

সংশ্লিষ্টদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে ক্লিংকার প্রস্তুতে ব্যবহৃত জ্বালানি কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্লিংকারের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। আর চীন হঠাৎ করে কয়লার আমদানি বৃদ্ধি করায় কয়লার দাম অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এফওবিতে বা উৎপাদন পর্যায়ে যেখানে প্রতি টন কয়লার মূল্য ছিল ৪০ থেকে ৪২ মার্কিন ডলার, সেটি এখন দাঁড়িয়েছে ৮২ মার্কিন ডলারে।

এসব কারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের অন্যতম মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে যার প্রভার দেশীয় সিমেন্ট খাতেও পড়তে পারে।

বিসিএমএ’র প্রেসিডেন্ট ও ক্রাউন সিমেন্টের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে অনেক দেশেই আবার নতুন করে উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে। তাই নির্মাণ সামগ্রীর চাহিদা বিশ্বব্যাপী গত কয়েক মাসে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে সিমেন্ট খাতের যে মূল কয়েকটি কাঁচামাল রয়েছে তার সবকটিই আমদানি নির্ভর। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশীয় বাজারে তৈরি পণ্যের (finished goods) মূল্য পরিবর্তনের সমূহ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

দেশীয় বাজারে সিমেন্ট খাতে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে সামঞ্জস্যতাপূর্ণ মূল্যের বাহিরে অতিরিক্ত মূল্যে এ পণ্যটি বিক্রি করা একেবারেই সম্ভব নয়। অর্থাৎ মনোপলির কোন সুযোগ নেই। কেবল আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যের ব্যতিক্রম হলেই তার প্রভাব আমাদের দেশে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিসিএমএ প্রেসিডেন্ট বলেন, তবে আমরা অনুরোধ করবো এদেশের উন্নয়নের স্বার্থে বিশেষ করে মধ্যম আয়ের ক্রেতার স্বার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অতিরিক্ত কর যা এখাতে অব্যাহত রয়েছে তা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসলে এখাতের পণ্য বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাবে। যেমন, দ্বৈত কর সমন্বয় করা এবং আমদানি পর্যায়ে নির্ধারিত শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকায় নির্ধারণ করা। তিনি মনে করেন, সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা সম্ভব হলে পণ্য বিক্রির বৃদ্ধির কারণে রাজস্বের পরিমাণও বেড়ে যাবে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.