
দুই মাস স্থগিত থাকার পর ফের জনশক্তি রপ্তানি শুরু হচ্ছে গৃহযুদ্ধে উপদ্রুত ইরাকে। আগামী সপ্তাহে দেশটির হানওয়া কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে ২০০ শ্রমিক নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনের প্রবাসী কল্যাণ ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ইরাকসহ কোনো দেশেই আমাদের শ্রমিক রপ্তানি বন্ধ নেই। তবে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করায় ইরাক ও লিবিয়ায় শ্রমিক রপ্তানি কিছু দিনের স্থগিত রাখা হয়েছিলো। ইরাকের বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ায় সেদেশে বাংলাদেশি শ্রমিক রপ্তানিতে কোনো সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, দেশটির বিভিন্ন কোম্পানি তাদের নির্মাণ শিল্পের কাজে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে আগ্রহী। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সেদেশের হানওয়া কোম্পানি ২০০ শ্রমিক নেবে।
মন্ত্রী বলেন, ইরাকে গৃহযুদ্ধ চলছে তা আমরা খুব ভালোভাবে অবগত রয়েছি। তবে ইরাকের বিবাদমান কোনো গ্রুপই বাংলাদেশের শ্রমিকদের তাদের টার্গেটে রাখেনি। বাংলাদেশের শ্রমিকদের যেসব কোম্পানি নিয়েছে তারা নির্দিষ্ট নিরাপত্তা জোন তৈরি করে শ্রমিকদের নিরাপদে রেখেছে।
এছাড়া নতুন করে যারা শ্রমিক নিচ্ছে তারা ৩০০ টাকার স্টাম্পে সই করে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার শর্তে লোক নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ সময় জনশক্তি রপ্তানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক বেগম সামছুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিরাপদে কাজ করার কথা জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, জর্দানে বাংলাদেশি ২০ হাজারের মতো নারী শ্রমিক রযেছে। সবাই কোনো ঝামেলা ছাড়া কাজ করছেন। তবে দালালদের খপ্পরে পড়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করে কিছু নারী দেশটিতে গিয়েছেন, যারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী আয় করতে পারছেন না।
দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমুহে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ অনেক ভালো জানিয়ে খুব শিগগিরই এ সব দেশে শ্রমিক রপ্তানি অনেক বাড়বে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ইরাকের বিভিন্ন শহরে বর্তমানে ২০ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন। গত দু’মাসে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের কারণে নাজাফ ও তিকরিত শহর থেকে দেশে ফিরে এসেছেন অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক।
এছাড়া নাজাফ শহরের একটি নিরাপত্তা তাবুতে বর্তমানে ১৮০ বাংলাদেশি শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে দাবি করছেন শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা। তবে সে দাবি মানতে নারাজ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।