ফেডের সুদহার না কমানোর খবরে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে 

চলতি বছরের শুরুর দিকে ধারণা করা হয়েছিল, এবছর ফেডারেল রিজার্ভ অন্তত ছয়বার নীতি সুদহার কমাবে। কিন্তু বাজারের সেই প্রত্যাশা এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল নীতি সুদহার কমানোর বিষয়ে মনোভাব পরিবর্তন করেছেন। এতে বেড়েছে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল নীতি সুদহার কমানোর বিষয়ে মনোভাব পরিবর্তন করার খবরে বেশ কিছু ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।

প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ডের সুদহার পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দ্বিতীয়ত বেড়েছে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার। ইউএস ডলার ইনডেক্স বা ছয়টি মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের যে মান নির্ধারণ করা হয়, সেই সূচক এখন গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০৬ দশমিক ৩ পয়েন্টে পৌঁছেছে।

বছরের প্রথম প্রান্তিকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অভ্যন্তরীণ কারণে যে মূল্যস্ফীতি ঘটে, যুক্তরাষ্ট্রে সেই প্রবণতা বেশ শক্তিশালী। বাজারের ধারণা, চলতি বছর নীতি সুদ ৩৪ ভিত্তিপয়েন্ট কমতে পারে। যদিও এক সপ্তাহ আগে ধারণা করা হচ্ছিল, নীতি সুদহার ৬০ ভিত্তিপয়েন্ট পর্যন্ত কমানো হতে পারে।

ডলার যখন আরও শক্তিশালী, তখন জাপানি মুদ্রা ইয়েনের মান প্রতিদিন কমছে। সর্বশেষ প্রতি ডলারের বিপরীতে ১৫৪ দশমিক ৬২ ইয়েন পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতিতে সরকার হস্তক্ষেপ করবে—এমন ঝুঁকি থাকলেও শেষ পর্যন্ত টোকিও মৌখিকভাবে সতর্ক করা ছাড়া আর কিছু করেনি।

জাপানবহির্ভূত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শেয়ার সূচক এমএসসিআই শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে, যদিও আগের দিন এই সূচকের পতন হয়েছিল শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। তাইওয়ানের বাজারও ভালো করেছে, আজ বুধবার দেশটির টিডব্লিউআইআই সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। তবে এশিয়ার অন্যান্য দেশের শেয়ার বাজার অনেকটাই মন্থর।

জাপানের নিকেই সূচক শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কমে গত দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এ ছাড়া চীনের ব্লু চিপস শূন্য দশমিক ১ শতাংশ পড়েছে আর হংকংয়ের হ্যাংসেং সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।

গতকাল মঙ্গলবার ওয়ালস্ট্রিটের স্টক নিম্নমুখী ছিল, যদিও দেশটির করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় বেশ ভালো। দুই বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ৫ শতাংশ থেকে কিছুটা কমে ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ; ১০ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশে উঠেছে। আর এসব কিছুর মূল কারণ, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার এ বছর হ্রাস করছে না—এমন সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার চলতি বছরের প্রথম তিন মাস টানা বেড়েছে। ফলে মুদ্রানীতির রাশ আলগা করা যেতে পারে—এমন আত্মবিশ্বাস জেরোম পাওয়েলের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়নি বা ফেডের নীতিপ্রণেতাদের সেই আত্মবিশ্বাস তিনি দেননি। তিনি বলেছেন, আগে যা ভাবা হয়েছিল, নীতি সুদহার হয়তো তার চেয়ে বেশি সময় ধরে ওপরের দিকে রাখতে হবে।

এখন ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছর বড়জোর দুবার হ্রাস করা হতে পারে। প্রথম নীতি সুদহার হ্রাস হতে পারে সেপ্টেম্বর মাসে, যদিও সে বিষয়ে বাজারের আত্মবিশ্বাসে অনেকটাই চিড় ধরেছে।

 

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.