খালেদা জিয়ার আবেদন হাইকোর্টের কার্যতালিকায়

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে করা আবেদন শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) এসেছে।

খালেদা জিয়ার করা আবেদনটি মঙ্গলবার (২৩ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য রয়েছে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ তথ্য জানিয়েছেন। কার্যতালিকার ক্রমানুসারে বিষয়টির শুনানি হবে বলেও জানান এ আইনজীবী। এর আগে আলোচিত নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ মে দিন ধার্য করেন বিচারক। ওইদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে হাজিরা দেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। এসময় বিচারক আসামিদের কাছে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ? অন্য আসামিরা নিজে এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। এরপর আদালত অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।

এ মামলায় বিচার শুরু হওয়া অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্যসচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

অন্যদিকে আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তের পর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়। একই মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

দুদকের করা অন্য দুই মামলায় (জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট) ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সাজাভোগ করছেন খালেদা জিয়া। তবে বর্তমানে তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে গুলশানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.