উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের ক্ষমতা কেড়ে নিলেন হাইকোর্ট

উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারাকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এই ধারা অনুযায়ী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলার মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। এই রায়ের পর উপজেলা প্রশাসন পরিচালনায় ইউএনও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না।

বুধবার উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ এই রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম প্রমুখ।

জনগণের ভোটে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা কীভাবে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির সভাপতি হন তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত এ রায় দেন।

এর আগে দেশের প্রতিটি উপজেলা পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মতো নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চের স্বাক্ষরের পর এসব আদেশের লিখিত অনুলিপি প্রকাশিত হয়। আদালত তার আদেশে উপজেলা পরিষদ ভবনের সাইনবোর্ডে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের পরিবর্তে ‘উপজেলা পরিষদ কার্যালয়’ লেখা সাইনবোর্ড টানানোর নির্দেশ দেন।

পাশাপাশি একই আদেশে উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮-এর ধারা ১৩ (ক), ১৩ (খ) ও ১৩ (গ) কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। মামলার বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে সে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এর আগে গত ১৫ জুন উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা খর্ব করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দেওয়ার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজসহ তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান এ রিট করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলা পরিষদের অধীনে ন্যস্ত সব দফতরের কার্যক্রম পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে ও বিধি অনুসারে করার জন্য ইউএনওদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে ইতিপূর্বে জারি করা সার্কুলার অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ইউএনওরা যাতে ওই সার্কুলার অনুসরণ করেন, সে জন্য পৃথক আরেকটি সার্কুলার জারি করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের এক সম্পূরুক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.