টেনেটুনে ২০০ করল বাংলাদেশ

পাওয়ার প্লে’তে স্কোরবোর্ডে ২ উইকেট হারিয়ে পঞ্চাশোর্ধ রান। সঙ্গে তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত’র লড়াকু হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে শঙ্কা জেগেছিল দুইশো’র আগে গুটিয়ে যাওয়ার। তবে নীচের দিকে ব্যাটারদের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত লড়াই করার পুঁজি পেল বাংলাদেশ।

এ দিন টস জিতে শুরুতেই ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের দলপতি তামিম ইকবাল। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমে একপ্রান্তে তামিম রান তুলতে থাকলেও ইংল্যান্ডের বোলিং অ্যাটাকের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় লিটন দাসকে। ১৩ বলে মাত্র এক রান সংগ্রহ করলেও ক্রিস ওকসের বুক বরাবর আসা বাউন্সার পুল শটে ছক্কা হাঁকিয়ে চাপমুক্ত হন লিটন। কিন্তু স্কয়ার লেগে ৮৫ মিটার ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই এই ব্যাটারকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন ইংলিশ এই পেসার। ওকসের স্ক্র্যাম্বেল্ড সিমে ফেলা ডেলিভারিটি সোজা এলেও লাইন মিস করেন লিটন। পড়েন লেগ বিফরের ফাঁদে। আম্পায়ার আউট দিলে রিভিউ নিয়েও কাজ হয়নি শেষ পর্যন্ত। পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট হারিয়ে ক্রিজে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

শান্তকে চাপে ফেলতে জোফরা আর্চারের ওভারে ফিল সল্টকে শর্ট লেগে নিয়ে আসেন জস বাটলার। সঙ্গে রাখেন দুটি স্লিপ সহ, গালি ও পয়েন্টে ফিল্ডার। তাতে সফল হতে হতেও হয়নি ইংল্যান্ড। জোফরাকে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে জেসন রয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন শান্ত। কিন্তু এই ইংলিশম্যানের দুর্দান্ত চেষ্টা হয় ব্যর্থ, হাত থেকে বল পড়ে যায় মাটিতে। জীবন পান শান্ত। সঙ্গী জীবন পেলেও পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে আউট হন তামিম। মার্ক উডের ভেতরে আসা গতিময় ডেলিভারিতে ইনসাইজড এজে বোল্ড হন বাংলাদেশ দলপতি। ২০২১ সালের পর ওয়ানডেতে এটিই এই ইংলিশ পেসারের প্রথম উইকেট।

তামিমের বিদায়ে দলীয় ৫১ রানে ক্রিজে আসেন মুশফিকুর রহিম। একটি করে উইকেট নেন উড ও ওকস। ১৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ২ উইকেটে ৬৩ রান। ততক্ষণ পর্যন্ত মোট ৫৮টি ডট বল খেলেছিল বাংলাদেশ। শান্ত-মুশফিক মিলে এরপর দলকে নিয়ে যেতে থাকেন ১০০’র পথে। কিন্তু ছোট জুটি গড়েও আদিল রশিদের ওভারে স্টাম্পের সামনে পড়া বল স্লগ সুইপ মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ওকসের তালুবন্দি হন মুশফিক।

৩৪ বলে ১৭ রানে তিনি ফিরলে একই ভঙ্গিতে মঈন আলীর বিপক্ষে আউট হন উইকেটে নতুন আসা সাকিব আল হাসানও। মঈনের মিডেল অ্যান্ড লেগে পড়া ডেলিভারিটি লাইনের বিপক্ষে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন সাকিব। ৮ রানে বিদায় নেন এই অলরাউন্ডার। দুই সঙ্গীকে দ্রুত হারালেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে বিপদমুক্ত করার সঙ্গে ৫০ রানের মাইলফলকে পৌঁছান শান্ত। আর্চারের ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে হাফ-সেঞ্চুরি। মাইলফলকে পৌঁছে দলকে দেড়শোর ঘরে নিয়ে গিয়ে রশিদকে উইকেট ছুঁড়ে দেন শান্ত।

৮২ বলে ৫৮ রানে জেসন রয়ের তালুবন্দি হন শান্ত। সঙ্গী হারানোর পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও প্যাভিলিয়নে ফিরতে বেশি সময় নেননি। উডকে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বাটলারের তালুবন্দি হন এই ব্যাটার। ৪৮ বলে ৩১ রানে তিনি ফিরলে দলকে আরও বিপদে ফেলেন আফিফ হোসেন।

উইল জ্যাকসের বলে রশিদের হাতে ক্যাচ দেন আফিফ। মেহেদি হাসান মিরাজ টেনেটুনে দলকে ১৮০’ ঘরে নিলেও আর্চারের লাফিয়ে ওঠা বল খোঁচা মারতে গিয়ে বাটলারের হাতে ধরা পড়েন তিনিও। ১৪ রানে মিরাজ ফিরলেও তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম মিলে দলকে কোনোমতে ২০০ রানের পুঁজি এনে দেন। কিন্তু তাসকিনকেও বিদায় নিতে হয় আর্চারের গতি সামাল দিতে না পেরে। লাফিয়ে ওঠা বলকে থার্ড ম্যানে খোঁচা গিয়ে তিনিও বাটলারের তালুবন্দি হন ১৪ রানে। পরের ওভারে মঈনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন তাইজুলও। ২০৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ২টি করে উইকেট নেন রশিদ, মঈন, আর্চার ও উড।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.