তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়াল

সোমবার ভোরে সিরিয়া ও তুরস্কে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এতে এখন পর্যন্ত তুরস্কে ২ হাজার ৯২১ জন ও সিরিয়ায় ১ হাজার ৩৫১ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷

ভূমিকম্পের পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে তুরস্ক৷ আবেদনে সাড়া দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৭টি দেশের ২০টি উদ্ধার দল দেশটির উদ্দেশে যাত্রা করে৷ পরবর্তীতে জরুরি চিকিৎসক দল পাঠানোর কথাও ভাবছেন ইইউ কর্মকর্তারা৷

আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান ইউনুস সেজের বলেছেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তুরস্কে নিহতের সংখ্যা অন্তত ২ হাজার ৯২১ জন। ভূমিকম্পে মোট ১৫ হাজার ৮৩৪ জন আহত হয়েছেন। পরে হতাহতের হালনাগাদ সংখ্যা আবারও জানানো হবে।

অন্যদিকে সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৫১ জন এবং আহতের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৩১ বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ৭১১ জন মারা যাওয়ার তথ্য জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ আর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে প্রায় সাড়ে ৬শ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে দ্য হোয়াইট হ্যালমেটস স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন৷

ভূমিকম্পের এপিসেন্টার বা ভূকম্পন বিন্দু ছিল তুরস্কের গাজিয়ানটেপ৷ স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪.১৭ মিনিটে ভূমিকম্প শুরু হয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে৷

‘৪০ বছর ধরে এখানে বাস করছি৷ আজকের মতো এমন অনুভূতি কখনো হয়নি,’ বলে জানান গাজিয়ানটেপের বাসিন্দা এরদেম৷ কমপক্ষে তিনবার খুব ভালোভাবে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলেও জানান তিনি৷

এর আগে ১৯৩৯ সালে তুরস্কে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল৷ সেই সময় ৩৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ এছাড়া ১৯৯৯ সালে ৭.৪ মাত্রার আরেক ভূমিকম্পে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন৷

সিরিয়ায় ১৯৯৫ সালে জাতীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র তৈরি হওয়ার পর এটিই সে দেশে আঘাত করা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প বলে জানিয়েছেন ঐ কেন্দ্রের প্রধান রায়েদ আহমেদ৷ দুর্গত এলাকায় ভবন ধসে পড়েছে৷ উদ্ধার তৎপরতা চলছে৷ লেবানন ও সাইপ্রাসেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে৷

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন তুরস্ক ও সিরিয়ার প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন৷ এছাড়া সহায়তা করতে ইতিমধ্যে ইইউর দল রওয়ানা হয়েছে বলেও জানান তিনি৷

নিহতদের আত্মীয়স্বজনের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ দুর্গত এলাকায় জার্মানি অবশ্যই সহায়তা পাঠাবে বলেও জানান তিনি৷

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেছেন, তুরস্ক ও সিরিয়ায় জরুরি সহায়তা পৌঁছাতে তার দেশ প্রস্তুত৷

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সিরিয়া ও তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে বার্তা পাঠিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন৷ রাশিয়া থেকে উদ্ধারকর্মীরা ঐ দুই দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন৷

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তুরস্ককে ‘প্রয়োজনীয় সহায়তা’ দিতে চেয়েছেন৷ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তুরস্কের তৈরি ড্রোন ইউক্রেনকে সহায়তা করছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.