ইসলামী ব্যাংকের ঋণের টাকা কার পকেটে?

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত শুরু

দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বড় অংকের প্রকৃত সুবিধাভুগী কারা, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ উদ্দেশ্যে মাঠে নেমেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি তদন্ত দল। এছাড়া ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার একদিনের মাথায় ইসলামী ব্যাংকে ঋণ কেলেঙ্কারি খতিয়ে দেখতে মাঠে নামে এতদিন নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিদর্শন দল ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করে। তারা ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক  মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সাথে বৈঠক করেন। একইদিন সন্ধ্যায় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বাংলাদেশ ব্যাংকে ডেকে পাঠানো হয়।

দেশের একটি বড় শিল্পগোষ্ঠি ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের কর্তৃত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই ব্যাংকটিতে ঋণ নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম শুরু হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই শিল্পগোষ্ঠির কর্ণধাররা বিভিন্ন কাগুজে কোম্পানি খুলে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে অর্থ সরিয়ে নেয়। এছাড়া  বিদ্যমান বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি আকারের কোম্পানিকে সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেওয়া হয়। এসব ঋণ অনুমোদনে মানা হয়নি যথাযথ প্রক্রিয়া। রাখা হয়নি পর্যাপ্ত জামানত। ওই শিল্পগোষ্ঠি এসব ঋণের বড় অংশের প্রকৃত সুবিধাভুগী বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি নাবিল গ্রুপ নামে অখ্যাত একটি গ্রুপকে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসে ইসলামী ব্যাংক ও এর কর্তৃত্বে থাকা শিল্পগোষ্ঠিটি। একাধিক সংবাদপত্র বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

গত রোববার (২৭ নভেম্বর) সচিবদের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে এসব ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট দিতে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে নির্দেশ দেয়। সেদিনই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে সচিবালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে সোমবার বিষয়টি খতিয়ে দেখার কার্যক্রম শুরু করে।

জানা গেছে, নাবিল গ্রুপকে দেওয়া ঋণের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে বিতরণকৃত ৫০ কোটি টাকার বড় অংকের ঋণগ্রহীতাদের বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ঋণের কোনো অর্থ পাচার হয়েছে কিনা, হুন্ডি কারবারে ব্যবহার হয়েছে কিনা-তা  যাচাই করা হবে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.