ইউক্রেনের মানুষের দুর্দশা কমাতে ‘ইনভিনসিবিলিটি সেন্টার’

ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর উপর রাশিয়ার লাগাতার হামলার ফলে শীতকালে সে দেশের মানুষের দুর্গতি বেড়েই চলেছে৷ আরো হামলার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে ইউক্রেনের সরকার একাধিক পদক্ষেপের উদ্যোগ নিচ্ছে৷ জ্বালানি সাশ্রয় ও বিকল অবকাঠামো যতটা সম্ভব দ্রুত মেরামতির চেষ্টার পাশাপাশি গোটা দেশে বিশেষ আপদকালীন আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলার ঘোষণা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি৷

মঙ্গলবার রাতে দৈনিক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ‘ইনভিনসিবিলিটি সেন্টার’ গড়ে তোলার ঘোষণা করেন৷ সেখানে বিদ্যুৎ, পানি, উত্তাপ, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন সংযোগ থাকবে৷ নাগরিকরা বিনামূল্যে দিনরাত সেই কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারেন৷ সেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধও পাওয়া যাবে৷ রাশিয়া আবার হামলা চালালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এমন কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবেন৷

ইউক্রেনের জাতীয় পাওয়ার গ্রিডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, রাশিয়ার হামলার ফলে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখতে হচ্ছে৷ এমন লোডশেডিং-এর সময়ে এক কোটি গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হচ্ছে৷ কমপক্ষে আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা দেখছে না ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ৷ রাজধানী কিয়েভের জ্বালানি পরিষেবা সংস্থা ইয়াসনো-র প্রধান সের্গেই কোভালেংকো নাগরিকদের গরম জামাকাপড় ও কম্বল মজুত করার পরামর্শ দিয়েছেন৷ দীর্ঘ সময় জুড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে মানুষ এভাবে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷

ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিক পরিষেবার কারণে দেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির অবস্থাও কঠিন হয়ে উঠছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এমন পরিস্থিতির কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ ডাব্লিউএইচও-র ইউরোপের দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক প্রধান হান্স ক্লুগে ইউক্রেন সফর করে বলেন, সে দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবার সবচেয়ে কঠিন সময় চলছে৷

ইউক্রেনের দুর্দিনে সে দেশের জন্য আরও আন্তর্জাতিক সহায়তার অঙ্গীকার বাড়ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন মঙ্গলবার ২৫০ কোটি ইউরো হস্তান্তর করেছে৷ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সে দেশ ৪৫০ কোটি ইউরো পাবে বলে আশা করছে৷ সেইসঙ্গে রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব৷ জি-সেভেন গোষ্ঠী বিশ্ব বাজারে রাশিয়ার পেট্রোলিয়াম রপ্তানি খর্ব করতেও ঊর্দ্ধসীমা ঘোষণা করতে চলেছে৷

যুদ্ধক্ষেত্রে একের পর এক পরাজয়ের পর রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর উপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা টাস দাবি করেছে, যে ইউক্রেন আলোচনায় রাজি না হওয়ায় সে দেশের জ্বালানি কাঠামোর উপর হামলা চালানো হচ্ছে৷ শীত আরও বাড়ার আগে পূবের দনিয়েৎস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণের জন্য দুই দেশের জোরালো সংঘর্ষ চলছে৷ ‘কিনবার্ন স্পিট’ নামের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পুনর্দখল করে ইউক্রেনের বাহিনী চেষ্টা চালাচ্ছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.