‘পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অবদান কম’

দেশের পুঁজিবাজারে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অবদান অনেক কম। বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়ানো দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এ কথা বলেছেন।

রোববার (২০ নভেম্বর) রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ হোটেলে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এজিবি লিমিটেডের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী আরও বাড়ানো উচিৎ। এছাড়া বাজার মূলধন ও জিডিপির মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা দরকার। বসুন্ধরা গ্রুপ ঝুঁকি নিয়ে পুঁজিবাজারে এসেছে। তাদের দেখে অন্যরাও যদি আসে তাহলে এই বাজার অনেক বড় হবে। অর্থনীতিতে অবদান আরও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল–ইসলাম বলেন, দেশের অর্থনীতিকে মানি মার্কেট ও পুঁজিবাজার এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) একটি শক্তিশালি বাজারে পরিণত হবে।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা সিএসইর পাশে থেকে সবসময় কাজ করে। তারা এই এক্সচেঞ্জের ভালো চায়। অনেক হতাশার খবর শোনা যায়। তবে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা বলছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো অবস্থানে রয়েছে। শিগগিরই সকল সমস্যা কেটে যাবে।

এসময় সিএসই’র চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো অবস্থানে রয়েছে। আজকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সঙ্গে বসুন্ধরার এজিবি লিমিটেডের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে। এটি দেশের পুঁজিবাজারের জন্য নতুন মাইলফলক।

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে বর্তমানে কিছু সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া রিজার্ভ নিয়ে কিছুটা চাপ আছে। তবে খুব দ্রুত এসব সমস্যা কেটে যাবে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবছর লভ্যাংশের কয়েক হাজার কোটি টাকা বিদেশে যাচ্ছে। তাই এসব বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বাধ্যতামূলক তালিকাভুক্ত করা উচিৎ।

মন্ত্রী বলেন, কোম্পানি আইন থেকে শুরু করে ডিমিউচুয়ালাইজেশনেও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। যত্র-তত্র ট্রেডিং না হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ট্রেডিং হওয়া দরকার। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে হবে। এজন্য এই এক্সচেঞ্জ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।

স্বাগত বক্তব্য সিএসইর পরিচালক মেজর এমদাদুল ইসলাম বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অর্থনৈতিক সুরক্ষার জন্য একটি পদক্ষেপ হচ্ছে পুঁজিবাজার।

অনুষ্ঠানে সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. গোলাম ফারুক এবং এবিজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান চুক্তিটি স্বাক্ষর করবেন।

দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেড সিএসই’র স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে কার্যক্রম পরিচলনা করবে। এবিজি লিমিটেড সিএসই’র ২৫ শতাংশ শেয়ার ক্রয় করার মাধ্যমে এই এক্সচেঞ্জের মালিকানায় কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অন্তুর্ভুক্ত হবে ।

জানা যায়, দেশের পুঁজিবাজারে সার্বিক উন্নয়ন ও কার্যকরী সমৃদ্ধি আনয়নের লক্ষ্যে এবিজি লিমিটেড বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। যা পুঁজিবাজারকে আরও সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিএসই’র চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর ডিরেক্টর মেজর (অব:) মো. এমদাদুল ইসলাম।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.