সাগর পাড়ি দিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় ১১০ রোহিঙ্গা

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের সাগর তীর থেকে নারী ও শিশুসহ ১১০ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। আচেহর মুয়ারা বাতু অঞ্চলের মিউনাসা বারো গ্রামের সাগর তীর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

এই রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৬৫ জন পুরুষ, ২৭ জন নারী ও ১৮ জন শিশু রয়েছেন। মঙ্গলবার ভোর বেলায় মিউনাসা বারো গ্রামের সাগর তীরে স্থানীয় এক জেলে তাদের প্রথম দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। তারপর পুলিশ তাদের উদ্ধার করে গ্রামের কমিউনিটি হলে নিয়ে আসে।

মুয়ারা বাতু পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা হেরমান সাপুত্রা ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি।

হেরমান সাপুত্রা বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে মিয়ানমার থেকে তারা রওনা হয়েছিলেন। অধিকাংশের সঙ্গেই দীর্ঘ যাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার ও পানি ছিল না। এ কারণে এই যাত্রীদের প্রায় সবাই শারীরিকভাবে খুব দুর্বল।’

‘আপাতত তাদের কমিউনিটি হলে রাখা হয়েছে। সরকার থেকে কোনো নির্দেশনা আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এই রোহিঙ্গা দলটির অন্যতম দস্য মুহম্মদ আমিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাদের গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া। নৌকাটি মালয়েশিয়ায় নোঙ্গর করবে জেনেই এক সপ্তাহ আগে তারা চেপেছিলেন সেটিতে। মঙ্গলবার ভোররাতে যখন তাদেরকে মিউনাসা বারো গ্রামে নামিয়ে দেওয়া হয়, সেসময়ও নৌকার চালক ও অন্যান্য লোকজন বলেছিল— তাদেরকে মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

২০১৭ সালে সশস্ত্র রোহিঙ্গাগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সীমান্ত চৌকিতে একযোগে বোমা হামলা চালায়। সেই হামলার জবাবে দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনীর হত্যা-ধর্ষণ-লুন্ঠন-অগ্নিসংযোগের সামনে টিকতে না পেরে ওই বছরই ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন মিয়ানমারে সেনা নিপীড়নে হতাহত বেসামরিক ও জ্বালিয়ে দেওয়া ঘরবাড়ির হিসাব রাখছে।

অন্যদিকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা বিদ্রোহ দমন করছে। রোহিঙ্গাদের ওপর পদ্ধতিগত নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তারা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.