এক মাসের ব্যবধানে এলসি খোলা কমেছে ৬৩ কোটি ডলার

এলসি খোলা ধারাবাহিকভাবে কমলেও আমদানি কমেনি। সেপ্টেম্বর মাসে ৫৭০ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়। যা আগস্টে ছিলো ৬৩৩ কোটি ডলারে। এক মাসের ব্যবধানে এলসি খোলা কমেছে ৬৩ কোটি ডলার। পাশাপাশি এসময় এলসি নিষ্পত্তিও কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকেই এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির পরিমাণ কমতে শুরু করে। গত জুন মাসে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৮৪৪ কোটি ডলার, যা জুলাইতে ৬৩৫ কোটি ডলারে নামে। আগস্টে এলসি খোলার পরিমাণ আরও কমে ৬৩৩ কোটি ডলারে নেমেছে। আর সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাসে আরও কমে এর পরিমাণ ৫৭০ কোটি ডলারে নেমেছ।

তবে এলসি খোলার পরিমাণ যে হারে কমেছে, এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ একই হারে কমেনি। গত জুনে এলসি নিষ্পত্তি হয় ৭৫০ কোটি ডলার। পরের মাস জুলাইয়ে এর পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৭৩৫ কোটি লাখ ডলার। আগস্টে এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ আরও কমে ৭৩২ কোটি ডলারে নেমেছে। আর সেপ্টেম্বরে ১৩২ কোটি কমে ৬০০ কোটিতে নেমেছে।

তবে আমদানি কমলেও ডলারের সংকট কাটছে না। এ অবস্থায় বাজারের সংকট কাটাতে ডলার বিক্রিও বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ৩৫০ কোটি ডলারের মতো বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত অর্থবছরে বিক্রি করা হয় ৭৬২ কোটি ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির ফলে রিজার্ভে চাপ বেড়েছে। গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ৩৬ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দর ৯৬ টাকা নির্ধারণ করলেও সাম্প্রতিককালে ডলারের সংকট নিরসন ও প্রবাসী আয় বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেরাই বসে ডলারের দাম নির্ধারণ করছে ব্যাংকগুলো। ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) যৌথ সভায় এ দাম নির্ধারণ করে।

বাফেদার ঘোষিত দাম অনুযায়ী, এখন থেকে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা কিনতে পারবে ব্যাংক। বাণিজ্যিক রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিল নগদায়ন হবে প্রতি ডলার ৯৯ টাকায়। এ ছাড়া রেমিট্যান্স আহরণ ও রপ্তানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় (ওয়েট অ্যান্ড এভারেজ) মূল্যের সঙ্গে সর্বোচ্চ এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করতে পারবে ব্যাংকগুলো। গত মাস সেপ্টেম্বরে বাফেদা রেমিট্যান্স কেনার সর্বোচ্চ দর ছিল ১০৮ টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৬৮৫ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ৬৫৬ কোটি, মার্চে ৭৬৭ কোটি, এপ্রিলে ৬৯৩ কোটি ও মে মাসে ৭০৫ কোটি, জুনে ৭৭৫ কোটি , জুলাই ৭৩৫ কোটি, আগস্ট ৭৩২ কোটি ও সবশেষ সেপ্টেম্বরে ৬০০ কোটি ডলার। চলতি বছরের নয় মাসে ৬ হাজার ৩৫৪ কোটি ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.