শর্ত সাপেক্ষে দুই বোনকে মুক্তি দিলো আদালত

অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিনের দুই মেয়ে শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

শর্তের মধ্যে রয়েছে, ৩০ দিনের মধ্যে পিপলস লিজিংয়ের পরিচালনা বোর্ডের কাছে তাদের কাছে মোট পাওনা প্রায় ১৯৭ কোটির মধ্যে ৫ শতাংশ ১০ কোটি টাকা জমা দিতে হবে। এছাড়া আজ দুই বোনসহ তাদের পরিবারের মোট ১১ জনের পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে। এরপর তারা র‌্যাবের হেফাজত থেকে মুক্তি পাবেন।

আদালতে দুই বোনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবু তালেব, পিপলস লিজিং পরিচালনা পর্ষদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান।

পরে অ্যাডভোকেট আবু তালেব বলেন, দুই বোন এরইমধ্যে তাদের পাসপোর্ট আদালতের কাছে জমা দিয়েছেন। তাদের পরিবারের বাকী ৯ জনের পাসপোর্ট র‌্যাবের কাছে জমা দিতে হবে। র‌্যাব আদালতের কাছে এ পাসপোর্ট জমা দেবেন। পরিবারের ১১ জনের পাসপোর্ট জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত তারা র‌্যাবের হেফাজতে থাকবেন। এছাড়া দেশের বাইরে যেতে তাদের আদালতের অনুমতি নিতে হবে।

গত ১৯ এপ্রিল ঋণখেলাপি দুইবোনসহ তাদের পরিবারের মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন হাইকোর্ট। তাদের আদালতে হাজির করতে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এর আগে ভোরে রাজধানীর ধানমণ্ডি ও শ্যামলী থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুই বোনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর দুপুরে র‌্যাব তাদের হাইকোর্টে হাজির করে।

গ্রেপ্তারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী। কর্মরত থাকাকালে নিজে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পরে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে অর্থআত্মসাতের অভিযোগে এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

মঈন বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া দুজন তাদের বাবা সাবেক পরিচালক খবির উদ্দিনের মাধ্যমে ঋণ নেন। শারমিন ৩১ কোটি এবং তানিয়া ৩৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তারা গত ২৮ জুলাই কানাডা থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং আজ পুনরায় গোপনে কানাডার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করছিলেন।

১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরবর্তী সময়ে নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ২০১৯ সালে কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময় আদালত পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.