২ হাজার ৩২০ কোটি টাকা ঋণ দেবে এডিবি  

বাংলাদেশের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে ২৫ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেবে উন্নয়ন সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৩২০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াছমিন এবং এডিবি আবাসিক প্রতিনিধি এডিমন গিন্টিং মঙ্গলবার (১৪ জুন) এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই করেছে।

সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিসর সম্প্রসারণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে এই অর্থ ব্যয় হবে বলে এডিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এডিবি জানায়, বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারে নীতিভিত্তিক এই ঋণ দেবে এডিবি। যা আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।

এ ঋণের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আরও শক্তিশালী করা হবে। এর আওতায় ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকগুলো শহর এলাকার ভাসমান মানুষসহ শহরের দরিদ্রদের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে বেকারদের কর্মসংস্থানে সুযোগ সৃষ্টি করবে।

বাংলাদেশে বেশির ভাগ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সরকারের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়। দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষকে এই কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা করা হয়। এই কাজগুলোকে আরও এগিয়ে নেয়া হবে। সরকারি অর্থায়ন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে এ ঋণ।

এডিমন গিন্টিং বলেন, ‘বাংলাদেশের আর্থসামাজিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করতে এবং সমন্বিত সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির প্রসারে সরকারকে সহায়তা করতে এডিবি অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই অঙ্গীকারের অংশ হিসেবেই বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করতে, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সম্প্রসারণ করতে এই ঋণ দেয়া হচ্ছে।’

এডিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এই অর্থায়নের মাধ্যমে যেসব সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে তার তার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি শক্তিশালী হবে। ডিজিটালাইজেশন ও বিভিন্ন কর্মসূচির সমন্বয়ের বদৌলতে এটি ঘটবে।’

‘এর ফলে নগদ অর্থ প্রদানভিত্তিক যেসব সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আছে, তার অন্তত ৮০ ভাগ সমন্বিত ও প্রমিত ব্যবস্থাপনার অধীনে চলে আসবে। ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে তা হয়ে যাবে। নগদভিত্তিক কর্মসূচির ভোক্তাদের মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।’

‘এ ছাড়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি তিনটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা হবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বছরে এমএফএস (মোবাইলে আর্থিক সেবা) হিসাব বছরে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করা হবে। ১০টি সিটি করপোরেশন এলাকায় অন্তত ৫০টি ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক স্থাপন করা হবে। আর ২০২৩ সালের মধ্যে অন্তত একটি সামাজিক বিমা কর্মসূচি পাইলট ভিত্তিতে চালু করা হবে।’

গত বৃহস্পতিবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এডিবির প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই ঋণসহায়তা অনুমোদন দেয়া হয়। তার পাঁচ দিনের মাথায় দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি সই হলো।

গত ৯ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নতুন অর্থবছরের জন্য (২০২২-২৩) পৌনে ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি আকারের বাজেট প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে অসহায় গরিব মানুষের সহায়তায় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা। এই বরাদ্দ মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

অর্থসূচক/এমএস/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.