হতাশ না হয়ে কৌশলে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ৪০ বছর আগেও ছিলো, ১০ বছর আগেও ছিলো। উন্নত দেশগুলো কৌশলে তা এড়িয়ে গেছে। আমাদেরকেও হতাশ না হয়ে কৌশলে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে।

শনিবার (১২ জুন) ঢাকার একটি অভিজাত ক্লাবে সদ্য প্রতিষ্ঠিত ‘সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট ডায়ালগ ( সিআইডিডি )’ এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ বাজেট ‘ – এর উপর এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিআইডিডির ম্যানেজিং ট্রাস্টি সৈয়দ নুরুদ্দীন আহমেদ এবং মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সিআইডিডি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ন্যায়বিচার আর সত্য এখন কোথাও নেই। বর্তমানে যে জাতিগুলো বিশ্ব শাসন করছে কেউ তাদের মুখোমুখি হতে চায় না। তারা যা আমাদের উপর চাপিয়ে দেয় তাই আমাদের মেনে নিতে হয়। প্রতিবাদ করার উপায় নেই এবং প্রতিবাদ করলেও প্রচুর লাভ-ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে সবাইকে।
এম. এ. মান্নান আরও বলেন, তারা সমস্যা তৈরী করে। বিশ্বকে বাজে পরিস্থিতির সম্মুখীন করে। তারপর মুদ্রাস্ফীতির মতো সুন্দর কিছু নাম দিয়ে তা আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজেটের পক্ষে আমি। এতে প্রান্তিক মানুষের পাশাপাশি সকলের অনেক উপকার সাধিত হয়। তবে আমাদের শিকার করতে হবে বর্তমান সরকারের আমলেও জিরো লাইনে অনেকটা পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে। না খেয়ে থাকা মানুষের সংখ্যা অনেক কমেছে। প্রান্তিক পর্যায়ে খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ এবং রাস্তাঘাটের পরিবর্তন এখন দৃশ্যমান।

অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সিআইডিডি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ শিক্ষক অধ্যাপক শেখ মোর্শেদ জাহান, সিআইডিডি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা অধ্যাপিকা সালমা আখতার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা অধ্যাপিকা সালমা আখতার বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে জেন্ডার বাজেট বিষয়টি প্রশংসনীয়। আমরা এটার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু যুব-বেকারত্ব বাংলাদেশের বড় একটি সমস্যা। এ বিষয়টি বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তার অনেকগুলো ইতিবাচক দিক ফুটে উঠতো।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ট্রাষ্টি সৈয়দ নুরুদ্দিন আহমেদ তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সিআইডিডি’র আদর্শ ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন , আমরা অন্তর্ভুক্তিমুলক উন্নয়ন চাই । সরকার , সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং জনগনকে সেই আদর্শে সচেতন ও উজ্জীবিত করা এবং পাশাপাশি পাবলিক পলিসিসমূহের অন্তরর্ভুক্তির জায়গাগুলোতে প্রয়োজনে পরিমার্জন , পরিবর্ধনএ ও পরিবর্তনের জন্য সরকারকে প্রভাবিত করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে সংস্থাটি গবেষণা ও বাস্তব ভিত্তিক কর্মসূচী ও কার্যক্রম হাতে নিয়েছে ।
অন্যদিকে সিআইডিডি’র মহাসচিব ও সাউথইষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড . এএফএম মফিজুল ইসলাম, ” মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন বাজেট চাই ” শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ।

তিনি বলেন, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে । কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করতে পারছে না। রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে সার আমদানি করতে পারছে না। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে। আমদানি কাঁচামালের দাম বেড়ে যাচ্ছে, জাহাজ ভাড়া বাড়ছে। সামনে আসছে স্বাভবিকের চেয়ে বেশী মাত্রার বন্যা। বিশ্বে দেখা দিচ্ছে মহামন্দা । এসব তথ্য একত্রিত করলে দাঁড়ায়- ২০২২-২৩ অর্থবছরে তেড়ে আসতে পারে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিআইডিডি এর চেয়ারম্যান ড. মোস্তফা কামাল মুজেরী

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.